বাংলাদেশ ছাড়ার আগে নাকি তাঁকে মাত্র ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছিল সেনা। দেশবাসীর উদ্দেশে ভিডিও বার্তা রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ও পাননি। সোমবার সেনা বিমানে ঢাকা থেকে দিল্লি এসে, মঙ্গলবার, বাংলাদেশের মানুষ বিশেষত পড়ুয়াদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)।
হাসিনার (Sheikh Hasina) কথায়, বিরোধীরা ছাত্রদের লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। সেই কারণেই তিনি ক্ষমতা দিয়ে এসেছেন। ছাত্রদের তাঁর শক্তি বলে উল্লেখ করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লেখেন, তারা চায়নি বলেই তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। হাসিনার দাবি, তিনি দেশে ছেড়ে না এলে আরও প্রাণহানি-সম্পদ নষ্ট হত।
আরও পড়ুন-সর্বদল বৈঠকে জয়শঙ্করের পাশে তৃণমূল
কী লিখেছেন শেখ হাসিনা?
“আমি পদত্যাগ করেছি,
শুধু মাত্র লাশের মিছিল জেনো না দেখতে হয়
তোমাদের (ছাত্রদের) লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলো ওরা, আমি হতে দেয়নি, ক্ষমতা দিয়ে এসেছি।
ক্ষমতায় আমি থাকতে পারতাম যদি সেন্টমার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার কাছে ছেড়ে দিতাম।
অনুরোধ রইলো তোমরা ব্যাবহার হয়ো না।
আমি বলে এসেছি আমার সোনার সন্তানদের যারা লাশ করে ঘরে ফিরিয়েছে তাদের জেনো বিচার করা হয়।
হয়তো আজ আমি দেশে থাকলে আরো প্রাণ ঝড়তো, আরো সম্পদ ধ্বংস হতো।
আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি,
তোমাদের জয় দিয়ে এসেছি, তোমরা ছিলে আমার শক্তি, তোমরা আমাকে চাওনি, আমি নিজেই তখন চলে এসেছি, পদত্যাগ করেছি।
আমার কর্মিরা যারা আছেন, কেউ মনবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বার বার উঠে দাড়িয়েছে। আপনারই দাড় করিয়েছেন। আশাহত হবেন না। আমি শিঘ্রয় ফিরবো ইনশাআল্লাহ। পরাজয় আমার হয়েছে কিন্তু জয়টা আমার বাংলাদেশের মানুষের হয়েছে। যে মানুষের জন্য আমার বাবা আমার পরিবার জীবন দিয়েছে।
খবর পেয়েছি ইতিমধ্যে অনেক নেতা কর্মিকে হত্যা ও বাড়ি ঘরে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করেছে।।
আল্লাহ অবশ্যই আপনাদের সহায় হবেন।
আমি আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আবারও বলতে চাই, আমি কখনই তোমাদের রাজাকার বলিনি। আমার কথাটা বিকৃত করা হয়েছে।
ঐদিনের সম্পূর্ণ ভিডিও তোমাদের দেখার অনুরোধ রইলো।
তোমাদের বিপদগ্রস্ত করে একদল তার সুবিধা নিয়েছে।
তোমরা ঠিকই তা একদিন অনুধাবন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভালো থেকো আমার দেশের মানুষ,
ভালো রেখো আমার সোনার বাংলাকে,
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু,
শেখ হাসিনা…“
তবে, হাসিনা দেশ ছাড়তেই আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদের উপর তীব্র আক্রমণ শুরু হয়েছে। প্রাণ ভয়ে গৃহবন্দি তাঁরা। ভয়ে ভয়ে মুহূর্ত কাটাচ্ছেন। একই সঙ্গে তীব্র অভিমান জমেছে দলনেত্রী হাসিনার উপর। আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন, উনি আমাদের ছেড়ে পালিয়ে গেলেন কেন? এখন আমাদেরে কী হবে? নেতা ছাড়া প্রাণ বাঁচিয়ে কীভাবে আবার সংঘবদ্ধ হবেন- তা ভেবেও কুল পাচ্ছেন না একসময়ের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।
একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে সোমবার রাতেই শেখ হাসিনার সজিদ ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তাঁর মা আশাহত। তিনি আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। বাংলাদেশেও ফিরতেন চান না। আর এই বার্তায় হাসিনা বলছেন, তিনি না কি শীঘ্রই বাংলাদেশে ফিরবেন! সব মিলিয়ে প্রবল অনিশ্চিয়তা আর উদ্বেগে দিন কাটছে আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মীদের।