কলম্বো, ৬ অগাস্ট : আর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের উইকেট এখন বেশ চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের সামনে। চাপ আরও বেশি জেফ্রি ভ্যান্ডারসের জন্য। আগের ম্যাচে আধ ডজন উইকেট নিয়ে যিনি রোহিতদের ২০৮ রানে থামিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ম্যাচে ৩২ রানে হেরে ভারত সিরিজে ০-১ পিছিয়ে পড়েছে। বুধবার জিতলে রোহিতরা বড়জোর ড্র করতে পারবেন। একদিনের সিরিজ জেতার আর কোনও সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন-বাংলাদেশে অস্থিরতার জের, পুরনো মেলার মাঠে বৃক্ষরোপণ
ভারতকে এই কঠিন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন ব্যাটাররা। রোহিত আর অক্ষর ছাড়া কেউ রান করতে পারেননি। বিরাট কোহলিও নয়। দুটি ম্যাচ মিলিয়ে তিনি করেছেন ৩৮ রান। তার থেকেও বড় কথা হল, বিরাট যেভাবে আউট হয়েছেন সেটা অনেকের মনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রথম ম্যাচে ওয়েনিন্দু হাসরাঙার লেগস্পিনে ঠকেছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর উইকেট নিয়েছেন আরেক লেগস্পিনার ভ্যান্ডারসে। যিনি প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের টার্নিং ট্র্যাককে পুরোদস্তুর কাজে লাগিয়েছেন।
মিডল ওভারে ভারতের রান তোলার সময় বরাবর বড় ভূমিকা নেন বিরাট। কিন্তু তিনি যেমন ইদানীং ব্যার্থ হচ্ছেন, তেমনই ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটিংও চাপের মুখে বারবার ভেঙে পড়ছে। শিবম দুবেকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বুধবারের ম্যাচে তাঁর জায়গায় রিয়ান পরাগকে খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে। যেমন কে এল রাহুলের জায়গায় উঠে আসছে ঋষভ পন্থের নাম। রাহুল রান করতে পারছেন না। একই অবস্থা শ্রেয়স আইয়ারেরও। স্পিনের বিরুদ্ধে পা এবং রিস্ট, কোনওটাই ব্যাবহার করতে পারছেন না এই দুই ব্যাটার। রোহিতকে দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে না এই উইকেট বা শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা কেউ তাঁকে সমস্যায় ফেলতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হল দুই ম্যাচের কোনওটাতেই তিনি ভারতকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিতে পারেননি। দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে রোহিত যেভাবে আউট হয়েছেন সেটা অনেকের মনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ওই সময় রিভার্স সুইপ মারতে যাওয়ার কোনও দরকার ছিল না। এদিকে, ওই ম্যাচে ব্যাট করার সময় ডান পায়ের মাসলে টান ধরেছিল রোহিতের। মঙ্গলবার দলের অপশনাল প্র্যাকটিসে তাঁকে মাঠে দেখা যায়নি। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, রোহিত শেষ ম্যাচে খেলবেন তো? আরেকটি ব্যাখ্যা হল, তিনি খেলবেন বলেই এদিন বিশ্রাম নিয়েছেন।
আরও পড়ুন-অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, কুপিয়ে-পুড়িয়ে-গুলিতে খুন
এই ম্যাচে শিবমের জায়গায় রিয়ানকে ভাবা হচ্ছে একজন বাড়তি স্পিনার পাওয়া যাবে বলে। অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে আরও একজন স্পিনারকে পাওয়া গেলে সেটা ভারতীয় দলের জন্য ভালই। আর এই উইকেটে শিবমের জেন্টল মিডিয়াম পেস বোলিং কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। বাকি বোলারদের নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। গত দুটি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে যথাক্রমে ১৪২-৬ ও ১৩৬-৬ করে দেওয়ার পরও জিততে পারেনি ভারত। শ্রীলঙ্কা এখান থেকে নিজেদের রানকে বাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে। অর্শদীপ, সিরাজরা আর রাশ টানতে পারেননি। ভারতীয় বোলিংয়ে সেই ঝাঁজটাই অনুপস্থিত ছিল।
শ্রীলঙ্কা গত ২৭ বছরে ভারতকে কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হারাতে পারেনি। চারিথ আসালাঙ্কারা তার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন। ভারতও আবার শ্রীলঙ্কারকাছে শেষ ১১টি সিরিজে হারেনি। সবমিলিয়ে বেশ উত্তেজক পরিস্থিতিতে রয়েছে বুধবারের ম্যাচ। রোহিতদের জন্য এটা মরণ-বাঁচনও ম্যাচ। আগের ম্যাচে হারের পর বাস্তব ছবিটা এখন এই, ভারত বড়জোর সিরিজ ড্র করতে পারে, জিততে পারবে না।