প্যারিস, ৬ অগাস্ট : জাতীয় কুস্তি সংস্থার দোর্দণ্ডপ্রতাপ কর্তা ব্রিজভূষণ সিংয়ের অপসারণের দাবিতে বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিকদের সঙ্গে বিক্ষোভ-আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। প্রতিবাদী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। যার জন্য খাস রাজধানীর রাজপথে শাসকের হাতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হতে হয় তাঁকে। সেই ‘দঙ্গল’ কন্যা বিনেশ ফোগট অপমানের জবাব দিলেন অলিম্পিকের মঞ্চে। প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগির হিসেবে অলিম্পিক ইভেন্টের ফাইনালে উঠে ইতিহাস লিখলেন বিনেশ। কুস্তির ৫০ কেজি ফ্রিস্টাইলে রুপো নিশ্চিত করে বুধবার সোনার লড়াইয়ে নামছেন হরিয়ানার মেয়ে। বিনেশের সৌজন্যে প্যারিসে ভারত চতুর্থ পদকও নিশ্চিত করল। ফোগট পরিবারের মেয়ের পারফরম্যান্স দেখে বজরং বললেন, বিনেশের অলিম্পিক পদক ব্রিজভূষণের গালে সপাটে চড়।
আরও পড়ুন-৬ বছর পর জেলমুক্তি খালেদার
কুস্তির ম্যাটে স্বপ্নের দিনে একের পর এক উঁচু র্যাঙ্কের প্রতিপক্ষকে হারালেন বিনেশ। সেমিফাইনালে অবশ্য তুলনায় সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছিলেন। কিউবার গুজমান লোপেজকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠলেন। বাউট জিতলেন ৫-০ ফলে। তার আগে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে টোকিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী কুস্তিগির বিশ্বের এক নম্বর জাপানের উই সুসাকিকে হারান বিনেশ। সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ছিলেন তিনিই। শেষ ৩০ সেকেন্ডে আগ্রাসী বাউটে জাপানি তারকাকে ৩-২ ব্যবধানে হারান বিনেশ। এরপর বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তারকা দু’বারের প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইউক্রেনের ওকসানা লিভাচকে ৭-৫ ফলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেন বিনেশ।
অপমানের জবাব দেওয়ার মঞ্চ ছিল অলিম্পিক। সেখানেই নিজেকে নিংড়ে দিলেন বিনেশ। টালমাটাল সময়ে ফোকাস হারিয়েছিলেন। কিন্তু হার-না-মানা মনোভাব দেখিয়ে অলিম্পিকে নিজেকে দেখার জন্য ফিরে আসেন। প্রতিটি লড়াইয়ে বিনেশের সেলিব্রেশনের ধরনই বলে দিচ্ছিল, সোনার মিশনে নেমেছেন ২৯ বছরের মেয়ে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
ভারতীয় কুস্তিতে ফোগট পরিবারের অবদান কম নয়। কাকা মহাবীর সিং ফোগট নামী কুস্তিগির। তিনিই বিনেশের প্রথম কোচ। বাবা রাজপালও ছিলেন কুস্তিগির। বিনেশের দুই তুতো বোন ববিতা ও গীতা। ফোগট বোনেদের কুস্তিগির হয়ে ওঠার কাহিনি নিয়েই তৈরি হয় আমির খানের ছবি ‘দঙ্গল’। এদিন অলিম্পিকের ম্যাটে আরও এক ‘দঙ্গল’ দেখল দেশবাসী। এখন শুধু অপেক্ষা বুধবারের স্বর্ণালি সন্ধ্যার।