আর জি কর (RG Kar Murder) মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনে অত্যন্ত কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা করে প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন করা হোক। স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। এখনই সঙ্গে তিনি জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের যদি মনে হয় রাজ্য সরকারে আস্থা নেই, তাহলে যে কোনও এজেন্সি তদন্ত করাতে পারেন।
আর জি করের (RG Kar Murder) ঘটনা শোনার পরেই শুক্রবার মৃতের পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী। এর পর শনিবার, সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানান, “তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যা হয়েছে সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। আমার মনে হচ্ছে, যেন নিজের পরিবারের কাউকে হারিয়ে ফেলেছি। এই ঘটনাকে কখনওই সমর্থন করা যায় না। জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি ওদের দাবির সঙ্গে একমত।“
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমি কাল ঝাড়গ্রামে ছিলাম। রাস্তা থেকে খবর নিচ্ছিলাম। মেয়েটির বাবা এবং মায়ের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। আমি আমার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের চিহ্নিত করে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফাস্টট্র্যাক আদালতে এই মামলা তুলতে এবং প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানাতে। এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই।“
আরও পড়ুন- হামাসকে শেষ করতে গাজার স্কুলে হামলা ইজরায়েলের! মৃত কমপক্ষে ১০০
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে ফাঁসির বিরোধী। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনায় এই ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন আছে। যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে এর সাহস না পায়।“
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের লুকানো কিছু নেই। রাজ্য সরকারে আস্থা না থাকলে যেকোন এজেন্সিকে দিয়ে তদন্তে রাজি মুখ্যমন্ত্রী। “আমরা সঠিক, পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।“ বলেন, “যাঁকে ধরা হয়েছে, তাঁর ওখানে যাতায়াত ছিল। যাঁরা হাসপাতালের ভিতরে যাতায়াত করেন, তাঁদের মধ্যেই কেউ এই কাজ করে থাকবেন। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশে আমি আগেও ছিলাম, এখনও থাকব। ওঁদের সঙ্গে আমি একমত।“ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাসপাতালে সুরক্ষা ব্যবস্থায় গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। “আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি হাসপাতালের সুপারেরও দায়িত্ব আছে। কোনও দিক থেকে গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।“
বিক্ষোভকারী ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, “আমরা নিশ্চিত করেছি যে প্রতিবাদকারী একজন চিকিৎসকও যেন কোনও ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হন।“ তাঁর কথায়, একজন সহকর্মীকে হারানোয় সবাইকে বিচলিত করে। আমার পরিবারেও দুজন জুনিয়র ডাক্তার আছে। আমি আগেও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ছিলাম এবং সবসময় তাঁদের সঙ্গে থাকব। প্রয়োজনে আমি আবার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও সিপিকে পাঠাব।“
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি পুলিশের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছেন। জানান, কলকাতার পুলিশ কমিশনার পুরো সময় হাসপাতালে ছিলেন এবং তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।“ একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আরজি কর প্রাঙ্গণ বাড়াতে হবে। আমি দেখব যে ট্রাম ডিপোর এলাকাটি এর জন্য ব্যবহার করা যায় কি না।“