লোকসভা ভোটের পর ভগবানপুর, হলদিয়া ও চণ্ডীপুরে ঘুরে দাঁড়াল তৃণমূল, সমবায় ভোটে খাতা খুলতে পারল না বিজেপি

ভগবানপুর, হলদিয়া এবং চণ্ডীপুরে সমবায় সমিতির ভোটে বিপুল জয় পেল তৃণমূল। তিন জায়গাতেই বিজেপি খাতা খুলতেই পারল না।

Must read

সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর : ভগবানপুর, হলদিয়া এবং চণ্ডীপুরে সমবায় সমিতির ভোটে বিপুল জয় পেল তৃণমূল। তিন জায়গাতেই বিজেপি খাতা খুলতেই পারল না। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে এই তিন এলাকাতেই লিড পেয়েছিল তারা। জেলায় এমন বিপুল জয়ে রীতিমতো খুশি তৃণমূল শিবির। এর মধ্যে সপ্তাহখানেক আগে ভগবানপুর-১ ব্লকের আবাসবেড়িয় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ৯টি আসনের মধ্যে ৮টিতেই জিতেছিল তৃণমূল। এবার সেই ব্লকের কাজলাগড় অঞ্চলে বড়াইবাড় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে বিরোধীশূন্য জয় পেল তৃণমূল। ৯টি আসনের সব কটিতেই ফুটেছে ঘাসফুল। ৯টি আসনের মধ্যে এসসি সংরক্ষিত একটি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। ফলে মনোনয়ন পর্বেই ওই আসনে জিতে যান তৃণমূল প্রার্থী। বাকি ৮টি আসনে তৃণমূল এবং বিরোধী জোট ৮ জন করে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। এছাড়া লড়াইয়ে ছিলেন জুই নির্দল প্রার্থী। কড়া পুলিশি ব্যবস্থায় ভোটগ্রহণ হয়। ৫২৯ জন ভোটারের মধ্যে ৪৮১টি ভোট পড়ে। ফলাফল ঘোষণা হতে দেখা যায়, আটে আট তৃণমূল। তারপরই সবুজ আবির উড়িয়ে জয়োল্লাসে মেতে ওঠেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে চলে মিষ্টি বিতরণ পর্ব। ব্লক তৃণমূল সভাপতি রবিনচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘এতদিন বামেরাই সমবায় পরিচালনা করত। এবার প্রথম নির্বাচন হল। তাতেই মানুষ আমাদের দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। সিপিএম আর বিজেপি গাঁটছড়া বেঁধেছিল। মানুষ মুখ ফিরিয়েছেন তাদের থেকে।’

আরও পড়ুন-জেসিনের গোলে ইস্টবেঙ্গল জয়ী

আবার, হলদিয়ার বড়বাড়ি গঙ্গেশ্বর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ১৫ আসনের সবগুলিতে জয়ী হলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। বাম ও বিজেপি একজোট হয়ে ভোটে লড়াই করেও গোহারা হেরেছে। সমবায় ভোট উপলক্ষে দেভোগের বড়বাড়ি, মনোহরপুর ও চাউলখোলা— এই তিন গ্রামে ছিল টানটান উত্তেজনা। মোট ভোটার ছিলেন ৬২৩ জন। ভোট দেন ৫১৮ জন। মোট ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তৃণমূল ও বাম-বিজেপি জোট ছাড়াও একজন নির্দল প্রার্থী ছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল পেলেও ভাল ফলাফল হয়নি। লোকসভা নির্বাচনেও ওই পঞ্চায়েতে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সমবায়ে জয়ের পর তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। রাম-বাম জোট কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। তৃণমূল নেতা সত্যেন্দ্রনাথ তুঙ্গ বলেন, রাম-বাম যে জোট হয়েছিল সেটা ওরা নিজেরাই স্বীকার করছে। ভোটে দাঁড়ানোর লোক পর্যন্ত পায়নি ওরা।
চণ্ডীপুর ব্লকের হাঁসচড়া উত্তর-পূর্ব ব্রজলালচক মিলনী সমবায় সমিতির ভোটে খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। ভোটে ৪৩টি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ স্থানীয় কুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। হাঁসচড়া উত্তর-পূর্ব ব্রজলালচক মিলনী সমবায় সমিতির সদস্য ১১৫০। ৪৩ আসনের একটি তফসিলি জাতি সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। ওই আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। বাকি ৪২টি আসনে ভোট হয়। হাঁসচড়া এমডি হাইস্কুলে ভোটদান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) তুহিন বিশ্বাস, চণ্ডীপুর থানার ওসি দীপক অধিকারী-সহ বিশাল বাহিনী উপস্থিত ছিল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংশুশেখরবাবু বলেন, ‘আমরা ৪৩টি আসনের সবকটিতেই জয়ী হয়েছি। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জিতেছিল। ওরা কলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের এক বছরের মধ্যেই মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে।’

Latest article