প্রতিবেদন : আরজি কর-কাণ্ডে (R G Kar Case) আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ৬টি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার দিনই এবং সোমবার সোদপুরে মৃতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে জানিয়েছিলেন, সিবিআই তদন্ত হলে রাজ্য সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তিনিও চান দোষীর ফাঁসির সাজা হোক। প্রয়োজনে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা চলুক। ওই ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তরফে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জমা দেওয়া কেস ডায়েরি-সহ পুলিশের পরপর পদক্ষেপ-সংক্রান্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেন। টালা থানা, লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অফিসার, ফরেন্সিক টিম— প্রত্যেকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ওই সেমিনার হলে অনেকগুলি পর্দার পার্টিশন ছিল। তার মধ্যে একটি পর্দার আড়ালে ওই ছাত্রীর দেহ পড়েছিল। তাই অনেকে ওই রুমে গেলেও প্রথমে কেউ কিছু দেখতে পায়নি বা লক্ষ্য করেনি। তাই ক্রাইম সিনে অনেকের হাত এবং পায়ের চিহ্ন রয়েছে। রাজ্যের আইনজীবী আরও জানান, পরিবারের অনুমতি নিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ করা হয়েছে। ওই দিন বিকেল ৪:২০ মিনিটে ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট তৈরি হয়, তাতে সই রয়েছে মৃতার মায়ের। পোস্টমর্টেম ও ইনকোয়েস্ট সবটাই ভিডিও করা হয়েছে। ২৭টি স্টেটমেন্ট রেকর্ড হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তদন্তে পরিবার খুশি। সিট গঠন করা হয়েছে। এরপর অমিতেশ কোর্টকে জানান, নির্যাতিতার ফোন ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। কারা ফোন করেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত করছে। ৩০-৩৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা রিপোর্ট দিতে চাই। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্ট এদিন সিবিআই তদন্তের রায় দিয়েছে। এই মুহূর্ত থেকে তারা কাজ শুরু করবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুনাল ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতা পুলিশ প্রথম থেকেই এই বিষয়ে কড়া মনোভাব পোষণ করেছেন। পুলিশের সেরা টিম এই ঘটনার তদন্ত করছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ফাস্টট্র্যাক কোর্টে তদন্তের পাশাপাশি ফাঁসি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি প্রথম থেকেই বলেছিলেন, অন্য কোনও এজেন্সির তদন্তে রাজ্যের কোনও আপত্তি নেই। এবার হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করবে। যদিও সিবিআইয়ের তদন্তে অতীতে কিনারা হওয়া কেসের সঙ্গে কিনারা হয়নি এমন রহস্যেরও প্রচুর নিদর্শন রয়েছে।
আরও পড়ুন- রাম-বামের আঁতাত ফের স্পষ্ট: রাজ্য জুড়ে হাসপাতালে রোগীদের হাহাকার