আগামী মাসে কুড়মি সমাজের ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রেক্ষিতে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আজ নবান্নে কুড়মি সমাজের ২১ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তপশিলি উপজাতি তালিকায় স্থান দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছে কুড়মিরা। বৈঠকে সেই কথাও উঠে আসে। রাজ্যের তরফে সমস্ত তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও এব্য়পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী কুড়মি নেতাদের জানিয়েছেন। ফলে রাজ্য চেষ্টা চালিয়ে গেলেও কুড়মিরা তপশিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। তবে রাজ্য সরকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে যাতে কুড়মিরা এই স্বীকৃতি পায়। পাশাপাশি, তাঁদের উন্নয়নের জন্য রাজ্যের তরফে দেওয়া আর্থিক প্যাকেজ এবং স্কুল সিলেবাসে কুড়মি ভাষায় পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা চলে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-রাতে জমায়েতের নামে নাটক কেন
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই নবান্নেই বিভিন্ন কুড়মি সামাজিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে কুড়মিদের নিয়ে সমীক্ষার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর পুরুলিয়ার সভাতেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘মাহাতোদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি আছে—তাদের জনজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হোক। আমরা যেটা শুরু করেছি, কোন কোন ভৌগোলিক অঞ্চলে মাহাতোরা থাকেন, প্রকৃত যারা মাহাতো, তাদের জন্য একটা সমীক্ষা করছি।’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুড়মি ক্ষোভ এবং জঙ্গলমহলের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল কুড়মিরা বোর্ড গড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী কুড়মিদের সমীক্ষার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর লোকসভায় জঙ্গলমহলে ভাল ফল করেছে তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া আসন তিনটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। তবে বিষ্ণুপুর এবং কুড়মি অধ্যুষিত পুরুলিয়া লোকসভায় এ বারও জিতেছে বিজেপি। ফলে, আগামীতে কুড়মিদের দাবি কতটা মান্যতা পাবে, সংশয়ে রয়েছেন কুড়মি নেতৃত্বের একাংশ।