প্রতিবেদন : ১৪ অগাস্ট। স্বাধীনতার রাত। মিড নাইট অনুষ্ঠান হয় গোটা দেশ জুড়ে। এই বাংলা বা শহর কলকাতাতেও ছোট-বড় অনুষ্ঠানে মাতে নানা সংগঠন। আর যাঁরা বলতেন, এ আজাদি ঝুটা হ্যায়, তাঁরাই ফের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানকে ছোট করতে রাতে জমায়েতের নাটক করছেন। আরজি করের ঘটনা ভয়ঙ্কর। প্রতিবাদ ছোট নয়। প্রতিবাদ চলুক। তা বলে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানকে লঘু করে কেন ঘটবে রাত-জমায়েতের নাটক? রোজ রাতে বা ভোরে এই বাংলায় অসংখ্য মা-বোন গ্রাম থেকে বেরিয়ে শহরে আসেন নানারকম কাজে। তাঁরা নিরাপদেই আসেন, নিরাপদেই ফেরেন। তাই এই রাত-জমায়েতের নাটকের কোনও দরকার নেই।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
স্বাধীনতা দিবসের স্মরণীয় মুহূর্তে সিপিএমের বিপ্লবীরা ডাক দিয়েছেন, ‘রাত দখল করুক মেয়েরা’। যে-রাতে ভারত স্বাধীন হয়েছিল, এবার সেই রাতেই ডাক দেওয়া হয়েছে নারী স্বাধীনতার। আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে আন্দোলনের জন্য কেন বেছে নেওয়া হল ১৪ অগাস্ট রাতকেই? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ঘটনার পর তো কেটে গিয়েছে চার-পাঁচ রাত। তাহলে কেন ১৪ অগাস্টের রাতকেই বেছে নেওয়া হল? সিপিএমের বিপ্লবী, বুদ্ধিজীবী, কলাকুশলীদের এই আন্দোলন প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। তিনি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন, সিপিএমের বিপ্লবীরা আগে বর্ণালী দত্ত, ডাঃ অনিতা দেওয়ান, তাপসী মালিক, ধানতলা, নন্দীগ্রামের হিসেব দিক। আর এই রাতের জমায়েত? রোজ রাতে আর ভোরে এই বাংলায় অসংখ্য মা-বোন যাতায়াত করেন। গ্রাম থেকে স্টেশন, রেল ধরে শহর। কতরকম কাজ। দেখুন। বুঝুন। তা দেখে বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।
কলকাতা দেশের মধ্যে নিরাপদতম শহর বলে জানিয়েছে কেন্দ্রের রিপোর্টই। তারপর কলকাতা তথা বাংলার নারী-নিরাপত্তা বা সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। বাম আমলে কোচবিহারে নার্স বর্ণালী দত্তকে ধর্ষণ করে খুন, বানতলায় চিকিৎসক ডাঃ অনিতা দেওয়ানকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। ঘটেছিল ধানতলা, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম। তারপর এখন বড় বড় কথা কীসের? আরজি করের ঘটনা জঘন্য। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী কঠোর অবস্থান নিয়ে যা যা করার করছেন। তারপর সিপিএম, বিজেপি নিজেদের ধোয়া তুলসীপাতা সাজিয়ে জ্ঞান দিচ্ছে। ঘটনার প্রতিবাদ হোক, নিন্দা হোক। কিন্তু বাম, বিজেপির নাটক বরদাস্ত নয়।