প্রতিবেদন : বাম জমানায় ধর্ষণ করে খুন করা অনিতা দেওয়ানের বিচারের দাবিতে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। আওয়াজ উঠল এই ঘটনায় দোষীদের সাজা দিতে হবে। আরজি করের ঘৃণ্য ঘটনায় সকলেই অপরাধীর ফাঁসির সাজা চাইছে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার এবং রাজ্য সরকারও এই ঘটনার কড়া নিন্দা করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একজন গ্রেফতারও হয়েছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যের নয়া কারামন্ত্রী হলেন চন্দ্রনাথ সিনহা
এই অবস্থায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার গিয়েছে সিবিআই-এর হাতে। কলকাতা পুলিশ যে ক’দিন তদন্তের সুযোগ পেয়েছে, দক্ষতার সঙ্গে তারা তাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও অপরাধীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। আচমকাই দেখা যাচ্ছে, রাম-বামের কু- আঁতাঁতের মিলিত উদ্যোগে রাস্তায় নামার ডাক দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচিকে অরাজনৈতিক বলে প্রচার করা হলেও আসলে যে এর পেছনে রাজনীতির কারবারিরাই রয়েছেন তা এখন স্পষ্ট। বাম আমলে ঘটে যাওয়া একের পর এক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে বাম এবং অতি-বামেরা তৃণমূল জমানার দু-একটি ঘটনাকে তুলে ধরে বিপ্লব করতে রাস্তায় নামছে। কিন্তু অনিতা দেওয়ানরা কি বিচার পেয়েছেন? বাম জমানায় যেভাবে অনিতাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে সেকথা কি ভুলে গেছেন কমরেডরা? বুধবার এই সন্ধিক্ষণে অসহায় অনিতা দেওয়ানের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন উত্তর কলকাতার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অনিতা দেওয়ানের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সভা করল তৃণমূল। সেখান থেকে একযোগে রাম-বামের এই আঁতাঁত ধুয়ে দিল তৃণমূল।
আরও পড়ুন-মেয়েদের রাত দখল: বিরোধীদের কর্মসূচির জেরে চলবে অতিরিক্ত মেট্রো!
আরজি করের এই ভয়ঙ্কর ঘটনায় আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। একজন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে আরও অনেককে জেরা করা হয়েছে। হয়তো তিন-চার দিনের মধ্যে পুলিশ জাল গুটিয়ে আনতে পারত। কিন্তু সেই সময়টা দেওয়া হল না তার আগেই সিবিআইকে দিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন প্রয়োজনের সিবিআইকে দেওয়া হলে আমরা আপত্তি করব না। পুলিশ হয়তো তিন-চার দিনের মধ্যেই বিষয়টা সলভ করে ফেলতে পারত কিন্তু তার আগেই সিবিআইকে দিয়ে দেওয়া হল। সিবিআই-এর কাছে আশা করব যেন আসল দোষী গ্রেফতার হয়। ধরে আনতে হবে বলে কাউকে একটা ফাঁসিয়ে দেওয়া হল এমনটা যেন না হয়। এদিন বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিতভাবে ঘৃণ্য। নিন্দার কোনও ভাষা হয় না। অপরাধীর ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত। কিন্তু যেভাবে রাস্তা দখলের নামে রাজনীতির উসকানি দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, কত মহিলা গ্রাম থেকে ভোররাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে স্টেশনে আসেন কলকাতা শহরের জন্য আবার মাঝরাতে স্টেশন থেকে ফেরেন।
মহিলাদের দখলে শহর আছে, সমাজ আছে। তাঁরা আমাদের মা আমাদের বোন। তাহলে আজ মহিলাদের দখল করতে হবে এই স্লোগান সিপিএমের স্লোগান। অনিতা দেওয়ানের আত্মা আজও কাঁদছে দোষীরা শাস্তি পায়নি। এরা এখন মুখোশ পরে নাটক করতে নেমেছে। তাই আমাদের বক্তব্য আমরা বাম জমানার অনিতা দেওয়ানের বাড়ির সামনে থেকে ধরনা দিয়ে শুরু করছি।
এক একটা পাড়ায় সিপিএম জমানায় যতগুলো এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সবকটি জায়গায় গণধর্ষণ বা গণহত্যা হয়েছে। এই সবকটি জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং মানুষকে মনে করিয়ে দিয়ে মুখোশ খুলে দেওয়া হবে। ঘৃণ্য রাজনীতি সিপিএম যা করছে আমরা তাদের মুখোশ খুলে দেব রাজনৈতিকভাবেই। এদিন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী, অয়ন চক্রবর্তী, প্রিয়দর্শিনী ঘোষ বাওয়া, মৃত্যুঞ্জয় পাল, ডাঃ মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায়, যুবনেতা শক্তিপ্রতাপ সিং, সন্দীপন সাহা-সহ অন্যরা।