বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্ম সৃষ্টির কথা বলেছেন। তাঁর দেখানো পথে এগিয়ে এসেছেন মহিলারা। স্বনির্ভর হয়েছেন। এবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় আলিপুরদুয়ারে তৈরি হল প্রথম আদিবাসী পোশাকের শোরুম। এই ভাবনা মধু চা-বাগানের মহিলা শ্রমিকদের। সম্প্রতি স্থানীয় চা বাগানে নিযুক্ত মহিলা চা শ্রমিকরা, ডুয়ার্সের বিভিন্ন জনজাতি ও উপজাতীর প্রথাগত পোশাকের একটি বিশেষ শোরুমের উদ্বোধন করেছেন হাসিমারায়। বিশ্ব আদিবাসী দিবসে চালু হওয়া মধুবাগান বহুমুখী সমবায় সমিতির এই শোরুমটি সকলের নজর কেড়েছে।
আরও পড়ুন-কংগ্রেসকে তোপ
আলিপুরদুয়ার জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ওল্ড হাসিমারায় অবস্থিত, এই শোরুমটি ইতিমধ্যেই আশাব্যঞ্জক ব্যবসায়িক লেনদেন করতে সমর্থ হয়েছে। এবং সামনের উৎসবের মরশুমে, বিশেষ করে দুর্গাপুজো ও দেওয়ালিতে আশাতীত ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করবে এমনটাই ধারণা তাদের সদস্যদের। এই উদ্যোগটি আলিপুরদুয়ারের চা-বাগানে আদিবাসী মহিলাদের দ্বারা হওয়া একেবারে প্রথম একটি উদ্যোগ। এই শোরুমে ঐতিহ্যবাহী শাড়ি, পাজামা-পাঞ্জাবি সেট এবং শিশুদের পোশাক সহ বিভিন্ন ধরনের প্রথাগত পোশাক রাখা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে নেপালি, ওরাওঁ, মেচ, মুন্ডা, সাঁওতাল, মাহালি এবং গারো সম্প্রদায় সহ বিভিন্ন উপজাতিদের পোশাক। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পোশাক হিসেবে রয়েছে সারনা শাড়ি, সাঁওতালি শাড়ি, এবং মুন্ডা শাড়ি, পাশাপাশি বিশেষ উপজাতীয় গামছা এবং নেপালি পোশাক। এই উদ্যোগ যাদের দ্বারা সম্ভব হয়েছে, সেই মধুবাগান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১০৩ জন সদস্য নিয়ে, যার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ছিল মহিলা শ্রমিক ও তাদের সন্তানরা। সোসাইটির সেক্রেটারি, কণিকা ধনওয়ারের মতে, আমরা আগে কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে চা-বাগান শ্রমিকদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের পথ দেখিয়েছিলাম। পোশাকের খুচরা বিক্রি আমাদের উদ্যোগকে আরও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবে। আমাদের সকলের জন্য এটি একটি নতুন আশার আলো। সমবায় সদস্য রুপম দেব জানান, এটি ডুয়ার্স অঞ্চলে একটি যুগান্তকারী প্রচেষ্টা। যা চা বাগানের বর্তমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নতুন দিক নির্দেশ করবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, আয়ের ধারাকে বৈচিত্র্যময় করা এবং এই সম্প্রদায়ের জন্য নতুন সুযোগ প্রদান করা।