প্রতিবেদন : ফাঁস হয়ে গেল জাতিদাঙ্গায় বিধ্বস্ত ডবল ইঞ্জিন মণিপুরের (Manipur Violence) মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক অডিও রেকর্ডিং। এক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, চালানো হোক বোমা-সন্ত্রাস। মণিপুরের শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা তো দূরের কথা, উলটে অশান্তির আগুন আরও উসকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-শাসিত মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। গুরুতর সংশয় দেখা দিয়েছে মণিপুরের জাতিদাঙ্গায় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে। অত্যন্ত গোপনে করা তাঁর কথাবার্তার ভয়েস রেকর্ডিংয়ে পাওয়া তথ্য বলছে, ৩ মে থেকে রাজ্যে শুরু হওয়া জাতিদাঙ্গায় অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক মারণাস্ত্র ব্যবহারে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন তিনি। ৫০ এমএম থেকে ৫৩ এমএম মর্টার বম্ব ব্যবহারে তিনি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। এই রেকর্ডিংয়ের অডিও ফাইল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিশন বা তদন্ত কমিশনের হাতে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর রহস্যজনক ভূমিকা এখন কমিশনের স্ক্যানারে।
একজন মুখ্যমন্ত্রীর এইরকম ধ্বংসাত্মক মনোভাবে বিস্মিত রাজনৈতিক মহল। উদ্বিগ্ন রাজ্যের আমজনতা। প্রশ্ন একটাই, দাঙ্গায় মৃত্যুমিছিল থামাতে পারেন না যে মুখ্যমন্ত্রী, তিনি কোন অধিকারে এমন ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র ব্যবহারে ইন্ধন জোগান। এই ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজত্বে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা তাহলে কোথায়? ৪৮ মিনিটের এই রেকর্ডিংটা করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। নিজের বাসভবনে আয়োজিত একটি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্যই হুবহু ধরে রাখা হয়েছে এই রেকর্ডিংয়ে। দাবি অন্তত সেটাই। ওই ব্যক্তি হলফনামা দিয়ে কমিশনে পেশ করেছেন অডিও ফাইলটি। শর্ত একটাই তাঁর নাম গোপন রাখতে হবে এবং যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রেকর্ডিংয়ের তারিখ এবং সময়ও উল্লেখ করা হয়েছে হলফনামায়। কোন পরিস্থিতিতে রেকর্ডিং হয়েছে তাও জানানো হয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে এ-খবর।
আরও পড়ুন- বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে ভারতবাসী, কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা মিলবে ব্লু মুনের
২০২৩-এর ৩ মে থেকে মারাত্মক আকার নিয়েছিল মণিপুরের কুকি-মেইতি সঙ্ঘর্ষ। ডবল ইঞ্জিন সরকারেরই তথ্য বলছে এ-পর্যন্ত ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি মতে অবশ্য সংখ্যাটা অনেক বেশি। জঘন্য অমানবিক নারীনির্যাতনেরও সাক্ষী হয়েছে মণিপুর। অবস্থা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি মোটেই। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়, এখনও একবারও দাঙ্গাবিধ্বস্ত মণিপুরে পা রাখার প্রয়োজন মনে করেননি প্রধানমন্ত্রী মোদি। এমনকী গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও এধার মাড়াননি তিনি। এবারে বেআব্রু হয়ে গেল মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ ভূমিকা। যদিও ওই অডিও ফাইলের সত্যতা অস্বীকার করেছেন তিনি।