প্রতিবেদন: বিশ্বের বহু দেশে সংক্রমণের আশঙ্কার মধ্যেই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে দিল্লির এইমস হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন ওই ব্যক্তি। শরীরে মাঙ্কিপক্সের (Monkey Pox) উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। এবি-৭ ওয়ার্ডে আলাদা করে রাখা হয়েছে। লক্ষণীয়, ২০২২-এও দিল্লি এইমসে মাঙ্কিপক্স সন্দেহে কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছিল। তারপর থেকেই এই হাসপাতালে মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ৫টি শয্যা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের জন্য। এদিকে বিশ্বজুড়ে এমপক্স হিসেবে পরিচিত মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ আরেকটি করোনা মহামারীর মতো হবে না বলেই মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু )। এর কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলছে, এই ভাইরাসটি অজানা নয়, এটির চরিত্র সম্পর্কে সবকিছুই মোটামুটি জানা। এর অর্থ হল ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় পরিচালক হ্যানস ক্লুগ বলেছেন, এমপক্স নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও ভাইরাসটির ক্লেড ১বি ধরন নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন- গ্রেফতার সন্দেহভাজন ১৪ আল কায়েদা জঙ্গি
২০২২ সালের জুলাইয়ে এমপক্স (Monkey Pox) ছড়িয়ে পড়া নিয়ে এক দফায় জনস্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে তখন তুলনামূলক কম সংক্রামক ক্লেড ২বি ধরন ছড়িয়েছিল। এমপক্সের ক্লেড ২বি ধরনটি প্রধানত সমকামী ও উভকামী মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ২০২৩ সালের মে মাসে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়। হ্যানস ক্লুগ বলেন, এমপক্স নতুন কোনও করোনা পরিস্থিতি তৈরি করবে না। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে অনলাইন ব্রিফিংয়ে হ্যানস ক্লুগ আরও বলেন, এমপক্সকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সেটা আমরা জানি। এমনকী ইউরোপীয় অঞ্চলে এর সংক্রমণ সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও আমাদের জানা। বিশ্বে এই মুহূর্তে এমপক্স ভাইরাসের কয়েক ধরনের সংক্রমণের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি ধরন সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। ক্লেড ১বি নামের ধরনটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে শনাক্ত হয়। আফ্রিকার দেশ কঙ্গোয় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এমপক্স এই মহাদেশের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, কেনিয়া। আফ্রিকার বাইরে শনাক্ত হয়েছে সুইডেন, ফিলিপাইনস ও পাকিস্তানে। এমপক্সে সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে এমপক্স ভাইরাস অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এমন সংস্পর্শের মধ্যে রয়েছে শারীরিক সম্পর্ক, ত্বকের স্পর্শ, কাছাকাছি থেকে কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ ফ্লুর মতো। রোগের একপর্যায়ে শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং তখনই এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।