টানা কর্মবিরতির জেরে অব্যাহত রোগী-ভোগান্তি

Must read

প্রতিবেদন : হাসপাতালগুলোর এখন একটাই ছবি। চিকিৎসা না পেয়ে চারদিকে হাহাকার। গরিব রোগীর পরিবারদের একটাই প্রশ্ন, আমাদের কি তাহলে এই আন্দোলনের জন্য বিনা চিকিৎসায় মরতে হবে? এই মর্মান্তিক দৃশ্যই এখন দেখা যাচ্ছে রাজ্যের প্রত্যেকটি হাসপাতালে। পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হবে, তুলতে হবে কর্মবিরতি। ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের আন্দোলনে অনড় চিকিৎসকেরা। আর তার জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গরিব অসহায় রোগী ও তাদের পরিবারকে। চরম অরাজকতা দেখা যাচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফেও দফায় দফায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে এক পা-ও নড়ছেন না তাঁরা। শনিবার স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠক করেন। কিন্তু সেই বৈঠকের পরেও রফাসূত্র মেলেনি।

আরও পড়ুন- তদন্ত চললেও মৃত্যু নিয়ে তবু অথৈ জলে সিবিআই

গ্রামের মানুষদের কাছে ভরসা রাজ্যের এই সরকারি হাসপাতাল। প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী বিভিন্ন জেলা থেকে শহরের এই সরকারি হাসপাতালগুলোতে আসেন চিকিৎসা করাতে। বহু মুমূর্ষু রোগীও আসেন বহির্বিভাগে পরিষেবা নিতে। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে একদিন বহির্বিভাগ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া মানে কয়েক হাজার প্রাণ নিয়ে কার্যত খেলা করা। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, সুপ্রিম কোর্ট, রাজ্য সরকার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছে৷ চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্তে হাহাকার রোগীদের মধ্যে। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে রোগী-পরিষেবা। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে স্বাস্থ্যসচিব নির্দেশ দিয়েছেন আন্দোলন চলুক তবে পরিষেবা সচল রাখতে হবে। আন্দোলনের জেরে যাতে কোনও প্রাণহানি না ঘটে সেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ পাননি। এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীর পরিবার বলে, বহির্বিবিভাগ থেকে বলা হচ্ছে রোগীকে ভর্তি করাতে হবে। কাগজপত্র তৈরি হয়ে যাওয়ার পরেও ভর্তি করা হচ্ছে না। ফিরে যেতে হচ্ছে অসহায় ভাবে। এটা কখনওই সঠিক আন্দোলনের পথ হতে পারে না। রোগী পরিষেবা দিয়েও আন্দোলন করা যায়। অপর দিকে, এসএসকেএম হাসপাতালেও একই চিত্র। আলিপুরে কাজ করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে এক শ্রমিকের কোমরের হাড় ভেঙে যায়। পিজিতে নিয়ে গেলে এই সিরিয়াস অবস্থা দেখেও তাঁকে ভর্তি না নিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

Latest article