প্রতিবেদন : সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। যার ফল ভোগ করে চরম হয়রানি রোগীদের। শোনা যাচ্ছে মঞ্চ বেঁধে এবার স্থায়ী আন্দোলনের ইঙ্গিতই দিতে চলেছেন তাঁরা। যেখানে মানবসেবার শপথ নিয়ে এই মহৎ পেশায় যোগদান করেন তাঁরা, সেখানে মানব জীবনকেই কীভাবে অন্ধকারে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এর থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে এই চিকিৎসকদের পিছনে কাদের মদত রয়েছে? চিকিৎসকদের ঢাল করে কারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই হাসিল করতে চাইছে? সাঁড়াশি চাপে প্রাণ যাচ্ছে অসহায় রোগীদের। অকালে স্বজনহারা হচ্ছে বহু পরিবার। বাংলার জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি সোমবার ১৭ দিনে পড়ল। শীর্ষ আদালতের বলা সত্ত্বেও যাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের কি দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের উপরও ভরসা নেই? রোগীর পরিবারের লোকেরাও তো নির্যাতিতার ধর্ষক ও খুনির বিচার চাইছেন, ফাঁসি চাইছেন। তাহলে কেন ধর্ষক খুনিদের কৃতকর্মের ফল ভুগতে হবে রোগী ও তাঁর পরিবারকে? কেন চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন অসহায় গরিব মানুষ? কেন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কয়েকশো অসহায় প্রাণকে?
আরও পড়ুন-দিল্লিতে ফুটপাতে ট্রাক, ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত তিন
আন্দোলনের জেরে হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে পরিবার। সামর্থ্য না থাকলেও বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। যদিও সেক্ষেত্রে রাজ্যের প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভরসা করছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, আরজি করে রবিবার ইমার্জেন্সির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ১৫ জন। আগে থেকে ভর্তি আছেন প্রায় ১৫০ রোগী। আর খালি পড়ে আছে ১,৮৫০টি বেড!
রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে রোগী-ভোগান্তি অব্যাহত। আরজি করের এমার্জেন্সি থেকে স্ত্রীকে হুইলচেয়ারে নিয়ে যাচ্ছিলেন পাইকপাড়ার ক্যাম্পবাগানের এক বাসিন্দা। তাঁর বক্তব্য, স্ত্রী পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছে। কিছু ওষুধ লিখে ছেড়ে দিলেন ডাক্তাররা। আর কতদিন এসব সহ্য করতে হবে? টানা কর্মবিরতির কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন হার্টের রোগীরা। ক’দিন আগে বুকে ব্যথা ও প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে পিজিতে গিয়েছিলেন বাগনানের এক মহিলা। ভর্তি হতে পারেননি। তাঁর মতো বহু রোগীর জীবন সঙ্কটে পড়ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে হার্ট অ্যাটাক ও ইমার্জেন্সি পরিস্থিতির রোগীদের এখন কলকাতায় আনছেন না গ্রামাঞ্চল ও শহরতলির মানুষজন।