প্রতিবেদন : দেশের শীর্ষ আদালত থেকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান প্রত্যেকের আবেদনের পরেও নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও নড়তে নারাজ জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের এই একরোখা সিদ্ধান্তের জেরে প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে রোগীদের জীবন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না পরিষেবা। প্রাণ যাচ্ছে মুমূর্ষু রোগীদের। কিন্তু চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে বহাল তবিয়তে। মানবসেবাকে পাথেয় করে যাঁদের জীবিকা শুরু হয়েছিল আজ সেই উদ্দেশ্যই প্রচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে।
রাজ্যের সব থেকে বড় হাসপাতাল এসএসকেএম থেকে শুরু করে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। পিজিতে কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টে বহির্বিভাগে রয়েছেন একজন মাত্র চিকিৎসক। এদিকে, এত বড় হাসপাতালে সকাল থেকেই রোগীদের ভিড় উপচে পড়ে। সেখানে একজন চিকিৎসকের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া কার্যত অসম্ভব। পাঁশকুড়া থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি ৮ তারিখ এসএসকেএমে আসেন। তখন তাঁকে বলা হয়েছিল ৩০ তারিখ তাকে ভর্তি নেওয়া হবে। কিন্তু এদিন হাসপাতালে এসে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর অবশেষে নাম কে ওয়াস্তে ডাক্তার দেখেন। পেটে ব্যথা-বমি নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা, আফসার আলি আসেন এসএসকেএমে। চিকিৎসক বাড়ন্ত থাকায় পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যান তারা।
আরও পড়ুন- ধর্ষণ সামাজিক সমস্যা! শুধু বাংলার নয়, মানলেন শ্রেয়াও
বারুইপুরের বাসিন্দা মহিউদ্দিন সাফিয়ার স্ত্রী এসএসকেমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে। শুধু ক্যানসার নয় গলব্লাডারে পাথর এবং টিউমারও রয়েছে তাঁর। একটি অস্ত্রোপচার হলেও তারপর আর চিকিৎসা এগোয়নি। অসহায়ের মতো হাসপাতালের এক কোণে পড়ে রয়েছেন তিনি। এর মধ্যে গত কয়েকদিনে মারাও গিয়েছেন বেশ কিছু রোগী।
একই চিত্র এনআরএস হাসপাতালেও। বাসন্তীর সোনাখালির বাসিন্দা উত্তম সরকারের গর্ভবতী স্ত্রীর হঠাৎই রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হাসপাতালে নিয়ে এলে কোনওভাবে রক্তক্ষরণ বন্ধ করানো হলেও স্ত্রী এবং গর্ভের শিশু কেমন আছেন সেই নিয়ে কোনওরকম খবর জানানো হচ্ছে না রোগীর পরিবারকে। এমনকী স্বাস্থ্যকর্মীরাও খুব একটা পরিষেবা দিচ্ছেন না। এনআরএসের আরও এক কাণ্ড প্রকাশ্যে এনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রোগীর পরিবার। এনআরএস-এ মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু উত্তর চব্বিশ পরগনার দ্রৌপদী দেবীকে জানানো হচ্ছে না একবারের জন্যও তাঁর প্রসূতি মেয়ে এবং সদ্যোজাত সন্তান কেমন আছে।