প্রতিবেদন : বিজেপিশাসিত হরিয়ানায় ফের লিঞ্চিংয়ের বলি হয়েছেন বাঙালি শ্রমিক সাবির মল্লিক। গোমাংস ভক্ষণের মিথ্যা অভিযোগে পিটিয়ে মেরেছে গো-রক্ষকরা। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে নিহত শ্রমিক সাবির মল্লিকের বাড়িতে যান তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রতিনিধি পাঠান। সাংসদ সামিরুল জানান, রাজ্য সাবিরের পরিবারের পাশে রয়েছে। তাঁর পরিবারের জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করবে রাজ্য। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিনিধি পাঠিয়ে ৩ লক্ষ টাকার চেক পাঠান সাবিরের পরিবারের জন্য। তাঁরা সেই চেক তুলে দেন সাবিরের পরিবারের হাতে। ধর্মীয় উসকানি দিয়ে নিরীহ শ্রমিককে পিটিয়ে মারার ঘটনার নিন্দা চলছে দেশজুড়ে। বিজেপি পরিচালিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আবার সেই ঘটনাকে সমর্থন করেছেন। এরপর বঙ্গের বিজেপি নেতারা কী বলবেন? বিজেপি রাজ্যে ধর্মীয় উসকানির প্রতিবাদ জানায় তৃণমূল। সংসদেও এই বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান সংসদ প্রতিমা মণ্ডল। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
রবিবার বাসন্তীর নিহত পরিযায়ী শ্রমিক সাবির মল্লিকের বাড়িতে গিয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ দফতরের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে। পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সাবিরের পরিবারে আছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, ভাই, বোন এবং স্ত্রী ও তিন বছরের একটি সন্তান। সাবির ছিলেন একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবার। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই পরিবারে একটি চাকরি দেওয়া হবে। জড়িতরা যাতে অবিলম্বে শাস্তি পান, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হরিয়ানা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। আবার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য তুলে দেন সাবিরের পরিবারের হাতে। পরিবারের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার, তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল থেকে সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন। এদিন সাংসদ সামিরুল ইসলামের সঙ্গে মাইনরিটি কমিটির চেয়ারম্যান সাবির সিদ্ধার্থ বসাকও যান অসহায় পরিবারের পাশে থাকার জন্য।
আরও পড়ুন-রাজ্যজুড়ে ধরনা মহিলা তৃণমূলের, আরজি কর-কাণ্ডে ন্যায়বিচার ও কঠোরতম শাস্তির দাবি
হরিয়ানার বাড্ডা থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্তে নেমে পুলিশ আটজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। মৃতের পরিবারের দাবি, সাবির কখনওই গোমাংস ভক্ষণ করেননি বা তাঁর পরিবারের কেউ গরুর মাংস ভক্ষণ করেন না। অর্থাৎ মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সাবিরের কফিনবন্দি দেহ বাসন্তীর বাড়িতে পৌঁছয়। তারপর সমাহিত করা হয়।