প্রতিবেদন : আজ, মঙ্গলবার আসছে ধর্ষণ-বিরোধী বিল, যেখানে থাকছে দুই কড়া আইন। ধর্ষণের মতো সামাজিক ব্যাধি-রোধে কড়া আইনের পক্ষে সওয়াল করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৮ অগাস্টের ছাত্র সমাবেশ থেকেই আইন আনার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এর নাম দেওয়া হয়েছে— ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী) বিল। প্রস্তাবিত বিলটিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও পকসো আইনেরও কয়েকটি ধারা সংশোধন করে কঠোরতর বিধি যুক্ত করা হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে এই আইনের কিছু ধারা সংশোধন করে আনা হচ্ছে। চটজলদি বিচারের জন্য শুধুমাত্র বাংলার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধারা যোগ করা হচ্ছে। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য। তাই বেশ কিছু বিধি যোগ হচ্ছে। যেমন, দ্রুত বিচারের বিধান। ডেডিকেটেড বিশেষ আদালত। ডেডিকেটেড তদন্তকারী দল। এই তদন্তকারী দলকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। ন্যূনতম সাতদিনের মধ্যে শেষ করতে হবে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে। এটা আগে ছিল ন্যূনতম এক মাস। যেখানে মূল আইনে এক বছরের মধ্যে শাস্তি দেওয়ার কথা ছিল। সেটা সংশোধন করে এক মাসের মধ্যে করতে বলা হল।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
মূল আইনে কোনও থানায় ঘটনা নথিভুক্ত করার পর সেটা দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা ছিল। সেটা ২১ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে সংশোধনীতে আছে। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় ২১ দিনে তদন্ত শেষ করতে পারছে না। সেটা ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিতে পারবে। তবে সেটি জেলা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা অথবা মৃত্যু। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে জরিমানা ও আমৃত্যু কারাদণ্ড ও মৃত্যু। ধর্ষণের অভিযোগের পাশাপাশি, ধর্ষণকারীর দ্বারা আঘাতের কারণে মৃত্যু হলে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা।
আরও পড়ুন-রাজনৈতিক চক্রান্তের ছক
কোমায় চলে গেলে এখানেও মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানার মতো কঠোর বিধি রাখা হচ্ছে। সর্বোপরি সব মামলাই হবে জামিন-অযোগ্য ধারায়। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় পুলিশ ২১ দিনে তদন্ত শেষ করতে পারছে না, আরও ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও আধিকারিক স্বয়ং ওই ঘটনার তদন্ত করবেন। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে হওয়া অত্যাচারের ঘটনার তদন্তে অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স তৈরির কথা বলা হয়েছে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জেলায় জেলায় বিশেষ আদালত গঠন করারও প্রস্তাব রয়েছে। যার দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট পদমর্যাদার পুলিশ কর্তারা। আজ বেলা ১২টা থেকে দু’ঘণ্টা এই বিলের উপর আলোচনা চলবে। উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।