প্রতিবেদন: সুপ্রিম কোর্ট যা নিষেধ করেছিল ঠিক সেই কাজটাই করছে কেন্দ্র। এর আগে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য সব ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ মেনে সেই খরচ মেটায়নি কেন্দ্র। এবার আবার নতুন করে কেন্দ্র রাজনীতি শুরু করেছে সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েই। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে কোনওপ্রকার রাজনীতি করবেন না, দিন কয়েক আগেই সবাইকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়৷ এবার সেই হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী ইস্যুতে রাজনীতি করতে শুরু করল মোদি সরকার৷ আরজি কর হাসপাতালে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকা-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার, এই মর্মে শীর্ষ আদালতে লিখিত অভিযোগ জানাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ চাওয়া হল সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ৷ রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সুবিধে প্রদান না করলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আর্জিও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷
আরও পড়ুন-নাবালিকার ধর্ষকের দালালের ভূমিকায় যোগীরাজ্যের পুলিশ
কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই আবেদন পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এমনটাই মনে করছেন দেশের শীর্ষ আদালতের আইনজীবী মহলের একাংশ৷ তাঁদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার কথা বলা হলেও এই বাহিনী রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কে বহন করবে সেই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়নি৷ এর আগে গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন রাখা কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ নিয়েও রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল৷ সেই সময়ে কলকাতা হাইকোর্ট এক রায়ে জানায়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ রাজ্যের যা খরচ হবে তার বিল পাঠালে পুরো টাকা রাজ্যকে মিটিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ হাইকোর্টের এই নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ পুরো খরচ বহন করে৷ তারপরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৩৫০ কোটি টাকার একটি বিল পাঠায় রাজ্যের অর্থ দফতর৷ সরকারি সূত্রের দাবি, এই বিলের টাকা এখনও বকেয়া রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷
শীর্ষ আদালতের এক আইনজীবীর ব্যাখ্যা, কেন্দ্র মনরেগা, আবাস যোজনা খাতে রাজ্যের ন্যায্য পাওনা কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে না৷ এবার ওরা চাইছে রাজ্যের ঘাড় দিয়ে আরজি কর খাতে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ তুলে নিতে৷ এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ৷ আরজি করের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করবেন না বলেছিলেন প্রধান বিচারপতি৷ তারপরেও কেন্দ্রীয় সরকার যা করছে তা লজ্জাজনক৷
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের দাবি, ৫ আগস্ট আরজি কর কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের করা মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত অভিযোগ তুলতে পারেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা৷ পাল্টা রাজ্য সরকারের তরফে তোলা হতে পারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ন্যায্য বকেয়ার বিবরণও৷