প্রতিবেদন : আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য সরকার এবং সিবিআই৷ সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আয়োজিত শুনানিতে সিলবন্ধ খামে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পেশ করা হয় স্ট্যাটাস রিপোর্ট৷ সোমবার দু’তরফের বক্তব্য শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ফের শুনানি। ওই দিন সিবিআইকে আবারও স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। গত চার সপ্তাহ ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলা জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার ধর্মঘটের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জানান রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল৷ ডাক্তারদের ধর্মঘটের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁরা৷ চার সপ্তাহ ধরে লাগাতার ধর্মঘট চলছে৷ ৬ লক্ষ লোক চিকিৎসা পায়নি৷ ওপিডি বন্ধ৷ আমরা কোথায় দাঁড়াব! কার্ডিওলজি, অঙ্কোলজির মতো জরুরি পরিষেবায় সব চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে৷ শীর্ষ আদালত শেষবার বলেছিলেন, সবাইকে কাজে যোগদান করতে৷ তারপরেও কাজে যোগ দেয়নি ধর্মঘটি চিকিৎসকেরা৷
আরও পড়ুন-সুপ্রিম-নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর
৪১ জন পুলিশকর্মী আহত, একজন চোখ হারিয়েছেন৷ ধর্মঘটি চিকিৎসকরা আহত পুলিশের চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি৷ এর পরেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সাফ জানান, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে সব ধর্মঘটি চিকিৎসককে৷ এই সময়ের মধ্যে যাঁরা কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না রাজ্য সরকার, স্পষ্ট করেছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়৷
তাৎপর্যপূর্ণ হল, সোমবারের শুনানিতে রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন বিচারপতিরা৷ ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতাল ঠিক কী ঘটেছিল? কখন উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ? কখন নথিভুক্ত করা হয়েছিল জেনারেল ডায়েরি? কখন করা হয়েছিল এফআইআর? সব প্রশ্নেরই যথাযথ উত্তর দেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল৷ এদিনের শুনানিতে কপিল সিবাল জানান, ৯ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুমে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ৷ সিবাল জানান, ওই দিন দুপুরে ১-৪৭ মিনিটে চিকিৎসকের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়৷ এর পরে জেনারেল ডায়েরি করা হয় দুপুর ২-৫৫ মিনিটে৷ মৃতদেহ উদ্ধারের পরে কখন করা হয়েছিল তল্লাশি এবং নমুনা সংগ্রহের কাজ? শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্নের জবাবে কপিল সিবাল জানান, ৯ অগাস্ট রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০-৪৫-র মধ্যে করা হয়েছিল তল্লাশি এবং নমুনা সংগ্রহর কাজ৷ মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল ৫ জন চিকিৎসক এবং একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে, আদালতকে জানান রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল৷
আগামী মঙ্গলবারের শুনানিতে রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে কখন হয়েছিল মৃতদেহের ময়নাতদন্ত৷ এই ক্ষেত্রে কোন চালান দেখে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল সেই নথিও রাজ্যকে পেশ করতে হবে আদালতে, নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়৷ রাজ্য পরের শুনানিতে সব নথি পেশ করবে, আদালতকে জানান কপিল সিবাল৷