সংবাদদাতা, কোন্নগর ও রিষড়া : মাস গড়িয়ে গেল আরজি কর-কাণ্ডে ন্যায়াবিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে। প্রায় রোজই নতুন নতুন দাবি তুলছেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও তাঁরা নিজেদের অবস্থানে অনড়। এদিকে এর জেরে সরকারি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সোমবার পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ২৪। মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত কোন্নগরের যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যের বাড়িতে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের প্রতিনিধিরা। এদিন বিক্রমের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তাঁদের মুখ থেকে শোনেন কীভাবে তাঁদের একমাত্র ছেলে চিকিৎসা না পেয়ে চোখের সামনে মারা গেল। কীভাবে তাঁরা একটু চিকিৎসার জন্য আরজি করের এ বিল্ডিং থেকে ও বিল্ডিং দৌড়ে বেড়িয়েছেন, হাতে-পায়ে ধরেছেন চিকিৎসকদের, কিন্তু কোনও কাজই হয়নি।
আরও পড়ুন-বিধায়ক তহবিলের অর্থানুকূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনে চিরঞ্জিত
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, তিলোত্তমার বিচার চেয়ে আপনারা আন্দোলন করছেন, কিন্তু আপনাদের কর্মবিরতির জেরে যে ২৪ জন মানুষের অকালে মৃত্যু হল, তার বিচার কে করবে? সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়া সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? তাদেরও তো বিচার চাইবার অধিকার আছে। তাঁরাও যদি আজ ন্যায়বিচার চেয়ে পথে নামেন তখন কি হবে? প্রতিনিধি দলের আর এক সদস্য বলেন, রাজ্যের গরিব মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান, কারণ তাঁদের বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। মুমূর্ষু মানুষের পরিবার নিরুপায় হয়ে ঘটিবাটি বিক্রি করে বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে তাদের প্রিয়জনকে বাঁচাতে। এর পিছনে যে কোনও অশুভ চক্র কাজ করছে না, তাই বা কে বলতে পারে? প্রতিনিধি দলের সদস্য বর্ণালি মুখোপাধ্যায় বলেন, তিলোত্তমার নৃশংস মৃত্যুর আমরাও প্রতিবাদ করেছি। আমরাও আন্দোলন করেছি। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনের নামে নিত্যনতুন দাবিদাওয়া নিয়ে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন যার পিছনে পরিষ্কার রাজনীতি। কোন্নগরের পর প্রতিনিধি দল যান পিজি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় মৃত রিষড়ার বাগপাড়ার রাজীব দেবের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তাঁরা রাজীবের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রকৃত ঘটনা শোনেন। এদিনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দোলা সেন, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, রন্তিদেব সেনগুপ্ত, বর্ণালি মুখোপাধ্যায়, সুশান রায়, বিভান ঘোষ, নাজমুল হক, অমিত কালী প্রমুখ।]