সংবাদদাতা, হাওড়া : কোনরকম পুনর্বাসন ছাড়াই প্রায় ২০০ টি পরিবারকে উচ্ছেদ করতে গিয়েছিল আরপিএফ। রেলের এই উচ্ছেদ অভিযানকেই রুখে দিলেন হাওড়ার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোলমোহর রেল কলোনীর হাজারখানেক মানুষ। প্রায় ৭০-৮০ বছর ধরে গোলমোহর রেল কলোনীতে বসবাস করে ২০০ টি পরিবার। পুজোর আগে উচ্ছেদ করতে গিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই বাধ সাধলেন স্থানীয়রা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে গো ব্যাক আরপিএফ বলে স্লোগান তুললেন তারা।
আরও পড়ুন-ডাক্তারের কুকীর্তি, মহিলাকে আটকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা
বুধবার রেলকর্তারা বিশাল আরপিএফ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ওই পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করতে যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছোন এলাকার বিধায়ক গৌতম চৌধুরি, হাওড়া জেলা(সদর) অইএনটিটিইউসির সভাপতি অরবিন্দ দাস সহ স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে রেলের এই বেআইনি উচ্ছেদের চেষ্ঠার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান তৃণমূল নেতৃত্ব। রেলকর্তা ও আরপিএফ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিধায়ক গৌতম চৌধুরি ও তৃণমূল-শ্রমিক সংগঠনের নেতা অরবিন্দ দাসরা। তাঁরা রেল কর্তপক্ষকে সাফ জানিয়ে দেন, উপযুক্ত পুর্ণবাসন ছাড়া কাউকে উচ্ছেদ করা চলবে না। বিধায়ক গৌতম চৌধুরি বলেন, এখানে প্রায় ১ হাজার মানুষের বসবাস। প্রত্যেকেই কম-বেশি ৭০-৮০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। প্রত্যেকের আধার-কার্ড, ভোটার কার্ড রয়েছে। তিন-চার পুরুষের বসবাস। তাসত্বেও আচমকা রেল কর্তৃপক্ষ এঁদের এখান থেকে উচ্ছেদ করতে এসেছিল। কিন্তু কোনওরকম পুর্ণবাসন তাঁদের দেওয়া হয়নি। আমরা রেলকে স্পষ্ট বলেছি পুর্ণবাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা চলবে না। এখানে অনেক পরিবার রয়েছেন যাঁদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে সামনেই পরীক্ষা। এই অবস্থায় এঁদের গৃহহীন করা যাবে না। এঁদের এখান থেকে তুলে দিয়ে রেল জায়গাটা বহুজাতিক সংস্থাকে দিয়ে দেবে। এখানে মানুষকে গৃহহীন করে সুইমিং পুল, শপিং কমপ্লেক্স খুলে ব্যবসা করবে। আমরা মানুষকে গৃহহীন করে এই কাজ করতে দেব না। আইএনটিটিইউসির হাওড়া সদরের সভাপতি অরবিন্দ দাস বলেন, আমাদের ওপর দিয়ে আগে বুলডোজার চালিয়ে তারপর ওই রেল-কলোনীর ঘর ভাঙতে হবে রেলকে। আমরা প্রাণ থাকতে পুর্ণবাসন ছাড়া একজনকেও উচ্ছেদ করতে দেব না। এই কথা রেল কর্তপক্ষকে এই কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি। রেলের কোনওরকম অমানবিক কাজ আমরা বরদাস্ত করব না। বেশ কিছুক্ষণ ওখান দাঁড়িয়ে থাকার পর অবস্থা বেগতিক বুঝে আরপিএফ ও রেলকর্তারা ফিরে যান।