প্রতিবেদন : সামনেই পুজো। চলছে কেনাকাটা। তাঁতে বোনা রুমাল থেকে রংবেরঙের শাড়ির বিপুল সম্ভার, চোখ ধাঁধিয়ে দেবে বাংলার রমণীদের। ক্রেতাদের মন জয় করতে বিপুল তাঁতের শাড়ির পশার সাজিয়ে বসেছেন শিল্পীরা। সল্টলেক করুণাময়ীর বইমেলা প্রাঙ্গণে শাড়ির সম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে বাংলার তাঁতের হাট। বুধবার অনুষ্ঠানের সূচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, বিভাগীয় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, মন্ত্রী তাজমুল হোসেন-সহ অন্যরা। উদ্বোধনের পর ব্রাত্য বসু বলেন, তাঁত শিল্পের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। ১৯২০ সালে আমরা দেখেছি ইংল্যান্ডে কিভাবে একের পর এক তাঁত শিল্পের উন্নয়ন। এখান থেকে আমাদের তাঁতিদের নিয়ে গিয়ে সেখানে শিল্পের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। তাঁত শিল্পের ইতিহাস ২০০ বছরের বেশি। একটা সময় তাঁতিরা ছিল বাংলার সব থেকে বড় সম্পদশালী অংশ। তাঁত শিল্প বাংলার অর্থনীতি বদলে দিয়েছে। অবিভক্ত বাংলার তাঁতের যে গৌরব তার পুনরুদ্ধারে সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-‘জাস্টিস চাই’ নেতার চরিত্র দেখুন! মহিলাদের কুপ্রস্তাব দিয়ে পাকড়াও
মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, বাংলার বস্ত্র শিল্পের একটা ঐতিহ্য বরাবরই আমাদের আছে। সেই ঐতিহ্যের কালেকশন সবার মনে দাগ কাটবে। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের হাতে তৈরি ডিজাইন কাপড়ের চাহিদা বাড়িয়েছে। গতবছরে এই বাংলা তাঁতের হাটে বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা। এ বছর বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। ছোট, বড় মিলিয়ে ৩০০টির উপর স্টল বসেছে। মেলায় পাওয়া যাবে বালুচরী, ধনেখালি, জামদানি, টাঙ্গাইল, মসলিন, শান্তিপুরী-সহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি।
আরও পড়ুন-উদ্যোগী বাংলা পক্ষ, চালু তিলোত্তমা টোটো স্ট্যান্ড
বিধাননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন গ্রাম থেকে তাঁতিরা এসে এখানে তাঁদের হাতে-বোনা শাড়ি বিক্রি করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাট এবং সুতোর যে দাম বেঁধে দিয়েছেন তাতে যেমন ক্রেতারা স্বল্পমূল্যে শাড়ি কিনতে পারছেন তেমনই বিক্রেতারাও নিজেদের লাভ দেখতে পাচ্ছেন। তন্তুবায় সমবায় সমিতি, খাদি, হস্ততাঁত মহল্লা, তন্তুজ-সহ একাধিক সংস্থা মিলিয়ে একাধিক স্টল জমিয়ে দিয়েছে তাঁতের শাড়ির মেলা। বাংলার তাঁতশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ। শহর ও গ্রামের শিল্পের মেলবন্ধন ঘটে এই মেলায়৷ গ্রাম ও মফস্বলের তাঁতশিল্পীরা বড় মঞ্চে যেমন তাঁদের কাজ প্রদর্শনের সুযোগ পান৷ তেমনই, শহরের মানুষেরাও হাতের নাগালে পেয়ে যান বাংলার তাঁতের শাড়ির বিপুল বৈচিত্রময় সম্ভার৷ ফলে বিপণনের পথটিও খুলে যায়। লাভের মুখ দেখে বাংলার তাঁত শিল্প৷ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতরের পক্ষ থেকে এই তাঁতের হাটের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন বেলা দুটো থেকে রাত দশটা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। কোনও প্রবেশমূল্য নেই বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।