প্রতিবেদন : জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নাকি অরাজনৈতিক! সেই আন্দোলনে এ কাদের আনাগোনা!? জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনায় হাজির বিজেপির যুব মোর্চার উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি সৌরভ দাস। একা নয়, সদলবলে, রসদ-সহ তাঁর উপস্থিতি। তাহলে কি আন্দোলনে রাজনৈতিক প্ররোচনা নেই? আর শুধু বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি নন, আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে আর রাজনৈতিক মঞ্চে বারবার দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের সক্রিয় উপস্থিতি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকার সম্পূর্ণরূপে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বারবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। তারপরও জট কাটছে না। জট কাটানোর সদিচ্ছা দেখাচ্ছেন না আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ। স্পষ্ট বাইরে থেকে প্ররোচনা দিয়ে এই আন্দোলন জারি রাখার একটা চেষ্টা চলছে। জুনিয়র ডাক্তারদের ‘অরাজনৈতিক’ আন্দোলনের নেপথ্যে রাম-বাম মদত স্পষ্ট। তৃণমূল কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি-সহ সেই প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। সিপিএমনেত্রী দীপ্সিতা ধর স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের আন্দোলনের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। আবার লোকসভা ভোটে তাঁর হয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সিনিয়র ডাক্তারবাবুকে। তাতে তো মিলে যাচ্ছে অঙ্ক। আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর বাম সমর্থনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল। শুধু বামেরা নন, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে মদত দেওয়ার কাজে যে পিছিয়ে নেই বিজেপিও, তার প্রমাণও মিলেছে। রসদ-সহ সদলবলে বিজেপি নেতার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তা ফাঁস করে দিয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন-স্কুলে যাওয়ার পথেই অসুস্থ, মৃত্যু ৪ বছরের নার্সারি পড়ুয়ার
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে জট কাটানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। অথচ বৃহস্পতিবার নবান্নের দোরগোড়ায় পৌঁছেও আলোচনায় বসলেন না আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রশাসনের উপর দায় চাপিয়ে ফের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধরনা মঞ্চে ফিরে গেলেন। মুখে অরাজনৈতিক আন্দোলনের বুলি আওড়ালেও প্রতিবাদ-ধরনায় যে বাম-বিজেপি নেতৃত্ব মদত দিচ্ছেন এবং শামিল হচ্ছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ছবি তা প্রমাণ করে দিয়েছে। খাবার আসছে যাদবপুরের ক্যান্টিন থেকে। সমাজমাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে উসকানি দেওয়ার কাজ চলছে। দীপ্সিতাই শুধু নন, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও ডাক্তারবাবুর ছবি। আবার মাদক-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী ডাক্তারদের পাশে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন, পদ্ম শিবিরের শর্বরী মুখোপাধ্যায় হাতপাখা নিয়ে চিকিৎসকদের বিক্ষোভে শামিল। তাহলে এই আন্দোলনকে কি আর অরাজনৈতিক বলা যায়? ছবি পোস্ট করে ঠিক এই প্রশ্নই তুলেছেন তৃণমূল নেতা সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সংসদ কুণাল ঘোষও একই প্রশ্ন তুলেছেন। সমাজমাধ্যমে উঠে আসা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে রাম-বামের যোগসূত্রের ছবি প্রমাণ করে অসহযোগিতা কেন আর আসল উদ্দেশ্যই বা কী! সাধারণ মানুষের মনেও এবার আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।