প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বৈঠকে ডেকে নিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের। সন্ধে সাড়ে ৬টার পর কালীঘাটে তাঁর বাসভবনে পৌঁছেছেন ডাক্তাররা। ৭টার কিছু পরে শুরু হয়েছে বৈঠক। এই নিয়ে পর পর পাঁচবার— জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে ডাকল রাজ্য সরকার। এর আগে টানা তিনদিন নবান্নে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। শুধু তাই নয় লাইভের আবদারে অনড় থেকে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েও বৈঠকে ঢোকেননি। একটার পর একটা শর্ত চাপিয়ে ক্রমাগত বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন ডাক্তাররা। আজ সোমবার ফের মুখ্যসচিবের চিঠির পর ডাক্তারদের তরফে জানানো হয় তাঁরা বৈঠকে যাবেন। এরপর বিকেলে এই মেলের প্রাপ্তি স্বীকার করে পাল্টা উত্তর পাঠিয়ে দেন মুখ্যসচিব। ৫টায় বৈঠকের নির্ধারিত সময় থাকলেও, স্বাস্থ্যভবনের সামনে নিজেরা জিবি বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্ট। তারা বিকেল ৫-১০ মিনিটে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, বৈঠকে তাঁরা দুজন স্টেনোগ্রাফার নিয়ে যাবেন। বৈঠকের মিনিটসে দু-পক্ষের সই থাকবে। সেইসঙ্গে কর্মবিরতি তোলা নিয়ে বৈঠকে কোনও কথা তাঁরা বলবেন না। বৈঠক ফলপ্রসূ না হলে তাঁরা ফের বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এই সংক্রান্ত একটি ইমেল ফের তাঁরা পাঠান মুখ্যসচিবের কাছে। এই টানাপোড়েনে তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই ৫টায় নির্ধারিত সময়ে কালীঘাটে যেতে পারেননি। তাঁরা পৌঁছোন অনেক পরে।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় ২ নাবালিকাকে গণধর্ষণ! ধৃত অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রীর পুত্র
সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে বৈঠকে বসার জন্য এটাই শেষ প্রচেষ্টা বলেও চিঠিতে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আজকের বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিও রেকর্ডিং কিছুই করা হবে না। তবে বৈঠকের মিনিটস তৈরি করে তা ডাক্তারদের দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রস্তাবিত বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর আন্দোলনকারী ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল ভিডিও রেকর্ডিং এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি ছাড়াই শেষ পর্যন্ত বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু অনেকটা সময় পার হয়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারি কর্তারা সেদিন আর বৈঠকে বসতে রাজি হননি। গত শনিবার দুপুরে এক-আকাশ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ছোট ছোট ডাক্তার ভাই-বোনদের ধরনামঞ্চে নির্দ্বিধায় চলে যান মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। আন্তরিক বক্তব্যে বোঝান, তিনি সমাধান চান। তবে সদিচ্ছা দরকার জুনিয়র ডাক্তারদেরও। ধরনাস্থলে দাঁড়িয়েই জানালেন একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত। গোটা বাংলা-সহ দেশ বিস্ময়ের সঙ্গে তাকিয়ে দেখল, সব ইগো একপাশে সরিয়ে রেখে আন্দোলনকারীদের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা অন্য যে কোনও দলের নেতা-নেত্রীরা ভাবতেই পারবেন না। বৃষ্টি মাথায় করেই মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের আবেদন জানিয়ে বলেন, আমার উপর আস্থা রাখুন, কাজে ফিরুন। আপনাদের সব দাবি বিবেচনা করব। আমাকে একটু সময় দিন। সামনেই সুপ্রিম কোর্টের শুনানি। কথা দিচ্ছি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী নয়, দিদি হিসাবে এটাই আমার শেষ চেষ্টা।