প্রতিবেদন : অমূলক সন্দেহ! দোসর কুসংস্কারও। হ্যাঁ, শুধুমাত্র সন্দেহ আর কুসংস্কারের বশেই পিটিয়ে মারা হল ৩ মহিলা এবং ২ জন পুরুষকে। এই ভয়াবহ মধ্যযুগীয় নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপিশাসিত ছত্তিশগড়ে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে প্রায় একই নৃশংসতা। বালোদাবাজারে ৪জনকে খুন করার পর এবারে নৃশংসতা সুকমায়। শুধু একজন পুরোহিতের ইঙ্গিতে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে রবিবার সুকমা জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে একদল লোক।
আরও পড়ুন-লজ্জা তাঁর নয়, অপরাধীদের আত্মপরিচয় প্রকাশ গিজেলের, ফ্রান্সের ভয়াবহ গণধর্ষণ কাণ্ড
ঘটনাস্থল সদর থেকে ৯০ কিমি দূরে একতাল গ্রামে। কী সেই ইঙ্গিত? কী সেই সন্দেহ? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি গ্রামে দু’জনের মৃত্যু হয়। একটি ছেলে এবং অন্যজন বয়স্ক ব্যক্তি। তাঁদের প্রিয়জনদের গ্রামেরই এক পুরোহিত বলেছিলেন, এই মৃত্যুর নেপথ্যে থাকতে পারে জাদুবিদ্যা। ৩ মহিলা এবং ২ জন পুরুষ এই কালাজাদু প্রয়োগ করতে পারে। একথা শুনেই গ্রামের একদল লোক ওই ৫ জনকে চিহ্নিত করে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁদের উপরে। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগই দেওয়া হয়নি তাঁদের। লাঠিসোঁটা দিয়ে চলতে থাকে বেদম প্রহার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আক্রান্তদের। নিহতরা হলেন, মৌসম কান্না (৩৪), তাঁর স্ত্রী মৌসম বিরি, মৌসম বুচ্চা (৩৪), তাঁর স্ত্রী মৌসম আরজো (৩২) এবং কারকা লাছি (৪৩)। পুলিশের বক্তব্য, গ্রামের একটি ছেলে এবং এক প্রবীণ ব্যক্তির কিছুদিন আগে স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এক আদিবাসী পূজারিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন হঠাৎ দু’জনের মৃত্যু হল? পূজারি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জাদুবিদ্যাই এর নেপথ্যে। তারপরেই এই গণপিটুনি এবং পরিণামে ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু। অভিযুক্তরা হল সাভলাম রাজেশ, সাভলাম হিডমা, করম সত্যম, কুঞ্জম মুকেশ এবং পোডিয়াম এনকা। সকলেই আত্মসমর্পণ করে পুলিশের কাছে। উল্লেখ্য, তিনদিন আগে বালোদাবাজার-ভাটাপাড়া জেলায় কালাজাদু করার সন্দেহে এক শিশু-সহ একই পরিবারের ৪ সদস্যকে হত্যা করা হয়।