প্রতিবেদন : অনিশ্চয়তার অন্ধকার দূর হয়ে সুদিনের আশায় ভূস্বর্গের আপেলের কারবারিরা। দিনের পর দিন সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা, এনকাউন্টার, রাজনৈতিক চাপানউতোরে কার্যত বিধ্বস্ত জম্মু-কাশ্মীর। তার অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী আপেলচাষ এবং আপেলশিল্পে। দেশের ৭৫ ভাগ আপেলই উৎপাদিত হয় এখানে। সেই কারণেই দেশের আপেল চাষের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় কাশ্মীরকেই। কিন্তু প্রাকৃতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এখানে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মন্দা। এর প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। একের পর এক সমস্যা। প্রতিকূল পরিস্থিতি, নামমাত্র লাভ এবং বাজারের ওঠানামা আপেল শিল্পের সমস্যাকে রীতিমতো জটিল করে তুলেছে। সেই কারণেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে আপেলচাষি এবং ব্যবসায়ীরা নতুন আশায় বুক বাঁধছেন।
আরও পড়ুন-সমাবর্তনে লোক হাসালেন বিজেপির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী
আশা একটাই, নতুন সরকার এসে আপেল শিল্পের সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে উদ্যোগ নেবে। কথা হচ্ছিল ইশফাক ইয়াসিনের সঙ্গে। জীবিকা আপেল চাষ। তাঁর কথায়, কৃষকদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। প্রথম সমস্যা হল আমদানি। দ্বিতীয় সমস্যা, কীটনাশক, সারের মূল্যবৃদ্ধি এবং অপ্রতুল সরবরাহ। সবচেয়ে বড় কথা, ভরতুকির বিষয়ে খুব একটা আগ্রহী নয় সরকার। এটিই আসল উদ্বেগের কারণ৷ তাহলে নতুন সরকারের কাছে কী আশা করেন আপেল উৎপাদক এবং ব্যাপারীরা? তাঁদের আশা, স্থানীয় কোনও নেতা নির্বাচিত হলে তিনি সমস্যাগুলির সমাধানে সচেষ্ট হবেন। ইশফাক মনে করেন, জম্মু ও কাশ্মীর বিশেষ করে কাশ্মীর আপেল শিল্পের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। আর এই শিল্পের উন্নতির জন্য আমি নিশ্চিত তারা অবশ্যই কিছু পদক্ষেপ নেবেন৷ দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা এবং শোপিয়ান, এই দুটি জেলা আপেলের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। কিন্তু সম্প্রতি পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রবল শিলাবৃষ্টি। উৎপাদন মার খাওয়ায় ব্যাপক মার খেয়েছে আপেল শিল্প। পুলওয়ামার কোল্ড স্টোরেজ ফ্যাসিলিটির ম্যানেজার রিজওয়ান গুলজার বললেন, কুলগাঁও এবং শোপিয়ান জেলায় এবছর ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে৷ অথচ এখান থেকেই সর্বোচ্চ উৎপাদন পেয়ে থাকি৷ ফলে কৃষকরা যে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তা আমাদের শিল্পে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন-বন্যা নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা নবান্নর, বণ্টন দায়িত্ব
বাইরে থেকে আপেল আমদানিও এখানকার ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দেশের আপেলশিল্পের উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আমদানির। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, আমদানি হোক, ক্ষতি নেই। কিন্তু এ ব্যাপারে একটা সুনির্দিষ্ট নীতি থাকা জরুরি। দেখতে হবে যাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের রুজিরোজগারে টান না পড়ে। তা ছাড়া ভরতুকির দিকটাও বিশেষভাবে নজর রাখা দরকার। এবিষয়ে একটি অ্যাসোসিয়েশন থাকা উচিত যা ভরতুকির হার নিয়ন্ত্রণ করবে। লক্ষণীয়, বুধবারই প্রথম দফার ভোট জম্মু-কাশ্মীরে। ৯০ আসনে ৩ দফার ভোট চলবে ১ অক্টোবর পর্যন্ত। ফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর।