প্রতিবেদন : সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি এবং বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার বাংলা শস্যবিমার ব্যাপ্তি বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে। চলতি বছর ১ লক্ষ কৃষককে বিমার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু সময় শেষ হয়ে এলেও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছতে না পারায় এবার কঠোর অবস্থান নিচ্ছে রাজ্যের কৃষি দফতর। নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শুক্রবার কৃষি দফতরের আধিকারিক ও জেলাশাসকদের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৭৫ হাজার কৃষককে বিমার আওতায় আনা গিয়েছিল। এবার ১ লক্ষ কৃষককে বিমার আওতায় আনার টার্গেট রয়েছে। কিন্তু হাতে আর মাত্র ১০ দিন সময়। বিমার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র ৩০ হাজার কৃষক।
আরও পড়ুন-তীব্র কটাক্ষে বিরোধীদের ধুয়ে দিলেন কবীর সুমন
এমতাবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কৃষি দফতর চলতি মাস থেকে জেলায় জেলায় শিবিরের আয়োজন করছে, যা চলতি মাসের শেষ অবধি চালানো হবে। এই মর্মে কৃষি দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত কৃষককেই বিমার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এজন্য জেলাগুলিকে লক্ষমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলির ব্লক অফিসের পাশাপাশি অন্যত্রও শিবির করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলা শস্যবিমা প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ ২২৮৬ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে ৮৫ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। গত খরিফ মরশুমের জন্য বাংলা শস্যবিমা যোজনা প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকার ফসলহানি বাবদ ১১ লাখ কৃষকদের ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ইতিমধ্যেই উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
নিম্নচাপ এবং বর্ষার বৃষ্টির জন্য বাংলায় দক্ষিণের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর তার জেরে ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে, শস্যহানি ঘটেছে। সেই উদ্বেগের প্রশমনে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বাংলা শস্যবিমার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে।
আরও পড়ুন-জখম পড়ুয়া, প্রশ্নের মুখে বেসরকারি স্কুল
একইসঙ্গে কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে শস্যহানির প্রমাণ সংগ্রহ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে শস্যখেত নষ্টের ছবি ও ভিডিও দিতে হবে প্রমাণ হিসেবে। শস্যবিমার টাকাও মিলবে ক্ষতিপূরণ মূল্যায়নের নিরিখে। কৃষি দফতরের তরফে আরও জানানো হয়েছে, বন্যা কবলিত জেলায় ধান ও খরিফ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার বিকল্প হিসেবে রবিশস্য চাষ করা যেতে পারে। সেজন্য বাড়তি সরিষা, তোরিয়া এবং ডাল বীজ সরবরাহ করা হবে। তা ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে পৌঁছে দিতে হবে। এই মর্মেও আধিকারিকদের ক্ষতির মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। সেই মর্মে জেলায় রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কৃষি দফতর। বন্যার জল নেমে গেলে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তসাপেক্ষে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।