প্রতিবেদন: বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের পর এবার ওড়িশা। তবে মধ্যপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছিল একদল দুষ্কৃতকারী, আর ওড়িশায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী। দুটি ক্ষেত্রেই আক্রমণের শিকার সেনা অফিসারের বান্ধবী ও বাগদত্তা। ১৪ সেপ্টেম্বর ভুবনেশ্বরে বাড়ি ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ওড়িশার ভরতপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে যৌন হেনস্থার ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে বেআইনিভাবে গ্রেফতার৷ পরে থানার মধ্যেই যৌন হেনস্থা৷ ভরতপুর থানায় সেনা অফিসারের বান্ধবী ওই মহিলার চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় একটি ঘরে। হাতপা বেঁধে তাঁর ওপর যৌননির্যতন চালায় পুলিশ।
আরও পড়ুন-উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যেই রানওয়েতে ধস!
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, বিজেপির মোহন মাঝির ওড়িশায় অরাজকতার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠছে। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে নারীনির্যাতন এখন মূল বৈশিষ্ট্য। সিট গঠন করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক৷ সংবাদমাধ্যমে ভয়াবহ সেই ঘটনার কথা জানিয়েছেন সেনা জওয়ানের বান্ধবী নিজেই৷ চাপে পড়ে অভিযুক্ত ৫ পুলিশ কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷ নির্যাতিতা জানান, সেদিন রাতে নিজের রেস্তোরাঁ বন্ধ করে সেনা জওয়ান বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন৷ সেই সময় রাস্তায় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে আপত্তি আচরণ করেন৷ লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েই ভরতপুর থানায় অকল্পনীয় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এখন ভুবনেশ্বর এইমসে চিকিৎসাধীন ওই নির্যাতিতা৷ তাঁর অভিযোগ, সেদিন রাতে সাধারণ পোশাকে বসে ছিলেন দুই মহিলা কনস্টেবল৷ তাঁদের কাছে সাহায্য চাওয়া হলে, তাঁরা কুরুচিকর মন্তব্য করতে শুরু করেন৷ এখানেই শেষ নয়৷ এরপর আরও কয়েকজন পুলিশকর্মী এসে তাঁর বন্ধুকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন৷ মহিলার কথায়, আমি কিছুর বোঝার আগেই লকআপে নিয়ে যাওয়া আমার বন্ধুকে৷ আমি ঘটনার প্রতিবাদ করতেই দুই মহিলা কনস্টেবল আমাকে মারধর করতে শুরু করেন৷
আরও পড়ুন-কোচবিহার-কলকাতা রুটে চালু হল এসি বাস পরিষেবা
নিজেকে বাঁচাতে এক কনস্টেবলের হাতে কামড় বসান জওয়ানের বান্ধবী তথা বাগদত্তা৷ এরপর তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে হাত ও পা বেঁধে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ৷ মহিলার অভিযোগ, কিছুক্ষণ পরে এক পুরুষ পুলিশকর্মী এসে তাঁর উপর যৌন হেনস্থা চালান৷ তিনি বুঝতে পারেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অবশ্য তাঁকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট৷ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে রাজ্য পুলিশের ডিজিপির কাছে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন৷ এক্স হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে একটি পোস্টও করা হয়েছে কমিশনের তরফে৷ অন্যদিকে, চন্দকা পুলিশ স্টেশনে শনিবার রাতে অভিযোগকারী মহিলা ও তাঁর বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হওয়া ঘটনার একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে একজন অসহায় মহিলার উপরে পুলিশের এই যৌননির্যাতনের ঘটনায় স্তম্ভিত সভ্যসমাজ।