মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ থেকে ৭৫ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে ‘কথাসাহিত্য’। বেরিয়েছে পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যা। সবিতেন্দ্রনাথ রায়ের সম্পাদনায়। মেলবন্ধন ঘটেছে আভিজাত্যের সঙ্গে আধুনিকতার। আছে নানা বিষয়ের লেখা।
পুরাণকথায় পূর্বা সেনগুপ্ত লিখেছেন ‘শরতের অতিথি— অকালবোধন’। তুলে ধরা হয়েছে দুর্গাপুজোর ইতিহাস।
আরও পড়ুন-বন্যা-কবলিত ১১ জেলায় জোরকদমে চলছে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার-কাজ
সাহিত্য-জীবনে সব থেকে বড় প্রাপ্তি পাঠকের ভালবাসা। প্রচেত গুপ্ত মুখোমুখি হয়েছেন নানা পাঠকের। বিচিত্র অভিজ্ঞতা উজাড় করে দিয়েছেন ‘আমার তরী ভরে আছে’ রচনায়।
সন্মাত্রানন্দ-র উপন্যাসের শিরোনাম ‘বিবশ বাদল ছায়’। ঐতিহাসিক উপন্যাস। মেবারের পটভূমিকায় লেখা। লেখনীর গুণে চরিত্রগুলো জীবন্ত। আছে গতি। একদমে পড়ে ফেলা যায়।
সায়ন্তনী পূততুণ্ডের উপন্যাস ‘দেবতার গ্রাস’। উত্তরপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম আত্তারি-র সঙ্গে পরিচয় ঘটে কাহিনির মাধ্যমে।
সৈকত মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘আলোছায়ার পথে’। কাহিনির কেন্দ্রে এক মধ্যবিত্ত নাগরিক যুবক। বিভিন্ন অফিসে ঘুরে ঘুরে বই বিক্রি করে। কোথাও উঁকি দেয় আলো, কোথাও ছায়া।
কল্লোল লাহিড়ীর ‘ঘুমিয়ে পড়ার আগে’, সরিতা আহমেদের ‘পারিজাতের খোঁজে’ উপন্যাস দুটিও পড়তে ভাল লাগে।
প্রবন্ধ বিভাগটি সমৃদ্ধ অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, প্রীতম সেনগুপ্ত, রাজর্ষি বিশ্বাস, সফিউন্নিসার রচনায়। নন্দিতা ভট্টাচার্য, পাঞ্চজন্য ঘটক, ডাঃ অর্পণ রায়চৌধুরীর ভ্রমণ সংখ্যাটিকে বৈচিত্র্যময় করেছে। গল্পকথার ঢেউ তুলেছেন সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, রামকুমার মুখোপাধ্যায়, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, দীপান্বিতা রায়, বিনতা রায়চৌধুরী, মৌমিতা, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, সেবন্তী ঘোষ, জয়ন্ত দে, অ্যাঞ্জেলিকা ভট্টাচার্য প্রমুখ। আছে একগুচ্ছ কবিতা। লিখেছেন সুবোধ সরকার, যশোধরা রায়চৌধুরী, অদিতি বসু রায়, ঋজুরেখ চক্রবর্তী, সুদীপ্ত মাঝি, সুস্মেলী দত্ত প্রমুখ। সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি সংখ্যা। প্রচ্ছদশিল্পী সৌজন্য চক্রবর্তী। দাম ২৫০ টাকা।
পাতায় পাতায় রঙের ছোঁয়া ‘ত্রিধারা’ শারদ সংকলনে। প্রকাশিত হয়েছে দেবাশীষ কুমারের সম্পাদনায়। আছে নানা বিষয়ের লেখা।
অষ্টাবক্র মুনিকে নিয়ে প্রবন্ধ রচনা করেছেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। তুলে ধরেছেন মুনির সঙ্গে জনকের কথোপকথন।
রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার শিরোনাম ‘মহর্ষি ও প্রজার কান্না’। এই প্রবন্ধের কেন্দ্রে হরিনাথ মজুমদার। তিনি ছিলেন সাহসী, প্রতিবাদী বাঙালি সাংবাদিক। প্রকাশ করেছিলেন ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ সংবাদপত্র। রুখে দাঁড়িয়েছিলেন জমিদার দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যাচারের বিরুদ্ধে। রচনাটি মূল্যবান।
অগ্রজ লেখকদের স্মরণ করেছেন প্রচেত গুপ্ত, ‘লিখতে বসলে অগ্রজদের কথা বারবার মনে পড়ে’ প্রবন্ধে। এসেছে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, রমাপদ চৌধুরী, সমরেশ মজুমদারের কথা।
বহুরূপীদের নিয়ে ছবি করছেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। খুব কাছ থেকে দেখেছেন তাঁদের। সেই অভিজ্ঞতা উজাড় করলেন ‘বহুরূপে বহুরূপীরা’ প্রবন্ধে।
আরও পড়ুন-রাজ্য জুড়ে ১৭৫ কিলোমিটারের কৃতজ্ঞতার মানববন্ধন, আমার হাত তোমার হাতে আমরা সবাই দিদির সাথে
পল্লব মিত্রর প্রবন্ধের শিরোনাম ‘সেকালের কলকাতায় হারিয়ে যাওয়া ফেরিওয়ালাদের ডাক’। লেখাটি মনকে স্মৃতিমেদুর করে তোলে।
কবি জন কিটস যাপন করেছেন ধূসর জীবন। অসুখ, দুঃখ ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। জীবনে এসেছিল ভালবাসাও। তাঁকে নিয়ে চমৎকার প্রবন্ধ উপহার দিয়েছেন সত্যম রায়চৌধুরী।
শিশু সাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকার এবং চিকিৎসক নীলরতন সরকার ছিলেন দুই ভাই। দুজনেই নিজে নিজে ক্ষেত্রে দিকপাল। প্রবন্ধে লিখেছেন দেবাশিস পাঠক।
সুশোভন অধিকারীর প্রবন্ধের শিরোনাম ‘কলাভবনে প্রথম দিন : চোখের দেখা মনের দেখা’। অনবদ্য প্রবন্ধ উপহার দিয়েছেন সুগত চক্রবর্তী। শিরোনাম ‘বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স ও তিন জেলাশাসক হত্যা’।
চিত্রনাট্য ‘পরকীয়া’। লিখেছেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। পড়তে ভাল লাগে। প্রফুল্ল রায়ের ‘কিছুক্ষণ’, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ‘আগুন’, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘ভূতের হাসি’ গল্পগুলো মন ছুঁয়ে যায়। এছাড়াও মনে দোলা দিয়েছে নলিনী বেরা, ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়, চুমকি চট্টোপাধ্যায়, দেবযানী বসু কুমার, পরিমল কান্তি ভট্টাচার্য, নবকুমার বসু, ড. শিবানী মুখার্জি পাণ্ডে, দীপান্বিতা রায়, জয়ন্ত দে, দেবারতি মুখোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষ রায়, সৈকত মুখোপাধ্যায় প্রমুখের গল্প। যোগেন চৌধুরীর ছবিভাষা এই সংখ্যার সম্পদ। কবিতা লিখেছেন বাণী বসু, সুবোধ সরকার, পঙ্কজ সাহা, সাদাত হোসাইন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণা বসু, নমিতা চৌধুরী, শিবাশিস মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাত, সায়ন তালুকদার, সুব্রতা ঘোষ রায়, অনীশ ঘোষ, বীথি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। সংগ্রহে রাখার মতো একটি সংখ্যা। প্রচ্ছদশিল্পী শুভাপ্রসন্ন। দাম ১৭৫ টাকা।