প্রতিবেদন : সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে বহিরাগতদের আটকানোর পাশাপাশি কর্মরত চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্যে কলকাতার সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের দিয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাঁদের। আরজি কর-কাণ্ডের জেরেই এই পদক্ষেপ। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছ থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সদর মিরাজ খালিদ কলকাতার সব থানার ওসি, ডিসি এবং যুগ্ম কমিশনারদের এক লিখিত নির্দেশিকা জারি করেছেন। কলকাতার সব মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালের বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেবে কলকাতা পুলিশ। আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে তাঁদের ৩ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশের দুই যুগ্ম কমিশনার এবং একজন ডেপুটি কমিশনারকে এই প্রশিক্ষণের খুঁটিনাটি তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-কাঞ্চনতলা জমিদারবাড়ির তিনশো পেরোনো ২২ পুতুলের পুজো
নির্দেশিকায় কলকাতা পুলিশের সমস্ত ডিভিশনের ডিসিদের বলা হয়েছে, তাঁরা নিজের নিজের ডিভিশনের মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালে কর্মরত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের নামের তালিকা তৈরি করে পাঠাবেন। পাশাপাশি, কবে কোথায় কোন ব্যাচের ট্রেনিং হবে, তা নির্ধারিত করতে ডিভিশনের ডিসিরা যুগ্ম কমিশনার (ট্রেনিং) মেহমুদ আখতারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলবেন। উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর-কাণ্ডের শুনানির সময় কলকাতা শহরের মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বেঞ্চ। বিচারপতিরা চুক্তিতে নিযুক্ত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর দক্ষতা ও সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তারপরই কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন-ডুলুংয়ের জল বেড়ে ঝাড়গ্রামের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন জামবনির গিধনি
রাজ্য পুলিশের এলাকায় সমস্ত সরকারি হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ি নেই। কিন্তু কলকাতা শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলির মাথায় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ডিএসপি) পদমর্যাদার ও সরকারি হাসপাতালে ইনস্পেক্টর পদমর্যদার অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। এমনকী যে আরজি কর নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানেও অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ডিএসপি) পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে একটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালে রোগী-মৃত্যুর পর কয়েকটি তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে। তারপর নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছিল। এবার শহরের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে থাকবে কলকাতা পুলিশের দ্বারা ট্রেনিংপ্রাপ্ত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা।