দেবব্রত বাগ, ঝাড়গ্রাম: প্রতি বছরই পুজোর সময় ঝাড়গ্রাম বেড়াতে আসে সাইবেরিয়া থেকে পরিযায়ী পাখির দল। জামবনি ব্লকের কেন্দুয়া গ্রামে। এটাই রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিনদেশি পাখিদের। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে দলে দলে, ঝাঁক বেঁধে আসে আর ঝাড়গ্রামে বাসা বাঁধে। কয়েক মাস পরমে নিশ্চিন্তে দিনগুজরানের পর ফিরে যায় আপন আলয়ে। তবে এই অতিথিদের কাছে বর্তমানে চরম সঙ্কটের কারণ হল রাত হলেই তাদের বাসায় হানা দেয় চোরাশিকারির দল। বর্ষার শেষে ঝাঁকে ঝাঁকে এই পাখির দল উড়ে এসে বাসা বাঁধে কেন্দুয়া গ্রামের যতীন্দ্রনাথ মাহাতর তেঁতুল গাছে। কার্তিক মাসের পর ফিরে যায় সাইবেরিয়া। কয়েক দশক ধরেই চলছে সাইবেরিয়ার অতিথিদের আনাগোনা। যতীন্দ্রনাথবাবুর জীবদ্দশায় এই অতিথিদের উপর আঘাত হানার সাহস কেউ দেখায়নি। তাঁর মৃত্যুর পর আঘাত নামতে শুরু করে এদের ওপর। রাতের অন্ধকারে গাছে জালের ফাঁস লাগিয়ে, বিষ মাখানো খাবার দিয়ে পাখিদের ধরে বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছে একদল চোরাশিকারি। এমনকি পাখি মেরে তার মাংস বিক্রিও করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-আর্থিক নির্ভরতা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী করেছেন উন্নয়ন, শ্রমিকসভায় সাংসদ
জঙ্গলমহলের পর্যটনের অন্যতম দর্শনীয় স্থান চিলকিগড়, রামেশ্বর, বেলপাহাড়ি, কাঁকড়াঝোড়, হাতিবাড়ি, সীমান্তের চিত্রেশ্বর, লালজলে আদিম মানুষের গুহার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে অতি প্রিয় কেন্দুয়া গ্রামের এই পরিযায়ী পাখিরা। ফি বছর বাংলার বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড-ওড়িশার ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা এদের টানে কেন্দুয়া ছুটে আসেন। তাই স্থানীয়রা পাখির দলকে রক্ষার জন্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে নিজেরাও রাত জেগে পাখিদের পাহারা দিচ্ছেন। পরিযায়ী পাখির কলরবে সকালে গ্রামবাসীদের ঘুম ভাঙে। তাই তারা আসার পর গ্রামবাসীরা আনন্দে থাকেন। ফিরে গেলেই মনখারাপ।