পাপিয়া ঘোষাল, প্রাগ: দশ বছপ পূর্ণ হল আমাদের দুর্গা পুজো। তাই ঠিক করলাম আমার কল্পনায় এবারের দুর্গা হবেন নির্ভীক সাধারণ মেয়ে। পুজো হচ্ছে চেক বারক ফাউন্ডেশনের গ্যালারি লাপিদারিয়ামে। ওল্ড টাউনে এই ভেনূ সম্পূর্ণ পাথরের গ্যালারি। চারিদিকে ফ্রেশকো এবং বৃহৎ আকারের ব্যারক মূর্তির সাজানো সম্ভার! প্রাগৈতিহাসিক প্রাগের পুরো গ্যালারি জুড়েই আমাদের পাণ্ডেল, মানে আর্ট ইন্সটলেসন!
আরও পড়ুন-দিল্লির আরামবাগ পুজো সমিতি সম্মান জানাবে ‘পরিত্যক্ত’ মায়েদের
থিম নির্ভীক অনার্য সাধারণ মেয়ে দুর্গা। চারিদিকে শুধুই ঝুলিয়ে রাখা হবে গামছা ও বনসাই। বনসাই শিল্পী মাইকেল। নানান দেশের শিল্পীরা মা দুর্গার বিভিন্ন রূপের ছবি এঁকেছেন। সঙ্গে সারা পৃথিবীর নানা ভাষার কবিতার লাইন। এবারের পুজোয় আমার শিল্পী পরিবারে থাকছেন ফিনিস শিল্পী রবার্ট লাশেনিউস, জার্মানী থেকে আসছেন গ্রাফিক্স আর্টিস্ট ইডেন, আরবের আসাম এল সব্বান, বাংলাদেশের রাতুল লাইসেন, চেক আর্টিস্ট মিলাদা, জার্মান আর্টিস্ট রবার্ট ও রেগিনা, ইত্যাদি বন্ধু রা যারা আমার আমন্ত্রণকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, নিয়ে আসছেন তাঁদের বিশেষ কাজ! আসছেন জার্মান সেতার বাদক মারকাস স্কমি। অক্টোবর ৯ তারিখ অর্থাৎ পুজো উদ্বোধনরে দিন থাকবেন সস্ত্রীক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রভীষ কুমার, চেক মেয়র তেড়েসা। নিউ ইয়র্ক থেকে আসছেন বক্তব্য রাখতে এক ঝাঁক বাঙালি। প্রধান উদ্যোক্তা গ্রেসি। তারা আসছেন অক্টোবর আমাদের কবিতা উৎসবে যোগদান করতে। আমরা সপ্তমীর দিন এক স্মরণ সভা করছি আমাদের পুজোয়। থাকবে কবিতা পাঠ, বক্তব্য, গান ও সাহিত্য, শুধুমাত্র দেবী কে অর্পণ করে। আমার পুজোর বৈশিষ্ট্য, মহিলা পুরোহিত। ২০১৫ সাল থেকে ভেবেছিলাম মায়ের পুজো আর এক মাতৃ শক্তি করবেন! প্রথমবার আমার ব্রাহ্মণ ধার্মিক মা শুক্লা, বাবা দিলীপ ঘোষাল, ও বাউল গুরু বাবা পূর্ন দাস বাউল শুরু করেছিলেন আমার এই মূর্তি পুজো, আমাদের চেক দেশে। জাত ধর্মের উর্ধে ভক্তি। তাই, এবারও এক ব্রিটিশ ব্রহ্মচারি পুরোহিত জানহবি মা, যিনি লন্ডন বেদান্ত আশ্রমের প্রধান, পুজো করতে আসছেন প্রাগে আমায় শ্রদ্ধা জানিয়ে! সঙ্গে থাকছেন শক্তি ও শিব ভক্ত চেক পুরোহিত পাবেল সেলবা। মা দুর্গার উপাসনার মাধ্যমে ভারতের প্রাচীন সভ্যতায় নারী শক্তির প্রতি প্রেম, পূজা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উপোমা এই চেক প্রজাতন্ত্র দেশে তুলে ধরা হলো আমার প্রধান উদ্দেশ্য।