প্রতিবেদন : শারদোৎসবে মাতোয়ারা বাংলা। শহর থেকে জেলা, পুজোর আবহে উৎসবে মেতেছে রাজ্যবাসী। পঞ্চমীর রাত থেকেই ঢল নামে শহরের রাজপথে। শেষবেলার অফিস সেরে উত্তর থেকে দক্ষিণ, সমস্ত পুজো মণ্ডপে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। মুঠোফোনে তৈরি করে রাখা লিস্ট মিলিয়ে চলে একের পর এক ঠাকুর দেখা। সঙ্গে টুকটাক পেটপুজো আর সেলফি তোলার হিড়িক। প্যান্ডেল হোক কিংবা ফুটপাথের খাবারের দোকান, কোথাও তিলধারণের জায়গা নেই। জনস্রোত নিয়ন্ত্রণে শহরের রাস্তায় ২৪ ঘণ্টার জন্য মোতায়েন হয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ। রয়েছে পর্যাপ্ত সিভিক ভলান্টিয়ারও। সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার পাশাপাশি কোথাও যেন কোনওরকম বিশৃঙ্খলা না তৈরি হয়, সেদিকে থাকছে কড়া নজরদারি। উৎসবের মাঝে রাস্তাঘাটে যান-চলাচল যতটা সচল রাখা যায়, সেই চেষ্টাও চলছে সমানভাবে।
আরও পড়ুন-দীর্ঘ বৈঠক, রাজ্যের প্রস্তাব অনড় ডাক্তাররা
মঙ্গলবার কয়েক পশলা বৃষ্টিতে কলকাতার রাস্তাঘাট ভিজলেও বুধবার সকাল থেকে রোদ-ঝলমলে শহরের আকাশ। সেই সুযোগে এদিন সকালে মায়ের বোধনের পরই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বিভিন্ন বয়সের উৎসবপ্রেমী মানুষ। শেষ পর্বের কেনাকাটা মিটেছিল আগেই। ষষ্ঠীর সকাল থেকে নতুন কেনা রংবেরঙের পোশাক পরে উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেল পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন মানুষ। কোথাও স্কুল-কলেজের বন্ধুবান্ধবদের ভিড়, কোথাও সদ্য প্রেমে পড়া যুগলের প্রথম পুজোর স্বাদ আস্বাদন, কোথাও আবার জীবনের বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসা বৃদ্ধ দম্পতির নিজেদের ক্যামেরাবন্দি করে রাখার চেষ্টা। ষষ্ঠীর সকাল থেকে এভাবেই উত্তরে টালা প্রত্যয়, হাতিবাগান সর্বজনীন থেকে শুরু করে মধ্য কলকাতার মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়্যার এবং দক্ষিণে চেতলা অগ্রণী, একডালিয়া এভারগ্রিনের মতো পুজো মণ্ডপগুলিতে জনসমুদ্র চোখে পড়ে। ভিড় দেখা যায় কলকাতার পুরনো বনেদি জমিদারবাড়ির পুজোগুলিতেও। এদিন সকালে অনেকেই ঠাকুর দেখার সূচনা করেন বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো মণ্ডপ থেকে। দর্শনার্থীদের কথায়, বাগবাজারে মায়ের রূপ না দেখে ঠাকুর দেখা শুরুর কথা ভাবাই যায় না। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল তিলোত্তমায় উৎসবও চলছে মহাসমারোহে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় বাড়ছে শহরের রাস্তায়। রাত যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়ও। রাতে আবার এক অন্য রূপ শহরের। আলোর রোশনাইয়ে কলকাতার এমন ভুবনমোহিনী লাস্যময়ী রূপ থেকে যেন চোখ ফেরানো মুশকিল। আলোকিত এই নগরের কোনায় কোনায় এখন শুধুই মহোৎসবের আবহ।