সুদেষ্ণা ঘোষাল, দিল্লি: রাজধানী দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের দুর্গাপুজোগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, বছরের পর বছর ধরে এখানে সব ধর্মের মানুষের মহামিলন যজ্ঞ আয়োজিত হয়ে থাকে৷ বাঙালিপ্রধান এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কে প্রবাসী বাঙালিদের একটা অংশ সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন নিজের নিজের পেশাগত কারণে৷
আরও পড়ুন-বিজয়ার পরও নবমীনিশির মায়াবী সুর মণ্ডপগুলিতে
দুর্গাপুজোর ক’টা দিন যাবতীয় ব্যস্ততা শিকেয় তুলে দিয়ে তাঁদেরই দেখা যায় মায়ের ভোগ প্রসাদ পরিবেশন করতে৷ এঁরাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মায়ের পুজোর সব ব্যবস্থা করেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন, সর্বোপরি পুজোর সব খুঁটিনাটির প্রতি সর্বক্ষণ কড়া নজর রাখেন৷ পুজো কমিটির এই সদস্যদের সঙ্গে যোগ দিতে দেখা যায় বিদেশের বুকে থাকা অনাবাসী ভারতীয়দের একাংশকেও৷ এঁদের অনেকেই দুর্গাপুজোর সময়ে দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে এসে মায়ের আরাধনায় ব্রতী হন৷ দুর্গাপুজো এবং লক্ষ্মীপুজোর পালা মিটলে তাঁদের দেখা যায় বিদেশে ফিরে যেতে৷ সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের একান্ত সহযোগিতাতেই বছরের পর বছর ধরে দুর্গাপুজোর সময়ে রাজধানী দিল্লির বুকে একখণ্ড বাংলাকে তুলে ধরে চিত্তরঞ্জন পার্ক৷
আরও পড়ুন-মোদির সবকা বিকাশের বেলুন ফুটো, লজ্জা! ক্ষুধাসূচকে পড়শিদের নিচে ভারত
এখানকার একটি বিখ্যাত পুজো হল মেলা গ্রাউন্ডের দুর্গাপুজো৷ সিআর পার্কের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিশাল মেলা গ্রাউন্ড জুড়ে প্রতি বছর এই পুজো আয়োজিত হয়৷ এবছর পুুজোর ৪৯তম বর্ষ৷ সাবেকিয়ানা এবং ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে আয়োজিত এখানকার পুজো আয়তনে, বহরে দিল্লির মধ্যে সব থেকে বড়৷ পুজোমণ্ডপ ও দুর্গাপ্রতিমাও দিল্লির মধ্যে সব থেকে বড় বলে দাবি জানান পুজো উদ্যোক্তারা৷ প্রতিবারের মতো এবারের পুজোতেও মেলা গ্রাউন্ডের পুজোর অন্যতম বড় আকর্ষণ ভরপুর পেটপুজোর আয়োজন৷ পুজোর প্রতিদিনই এখানে ছিল পংক্তিভোজনের ব্যবস্থা৷ পুজোমণ্ডপের বাইরে থাকে প্রচুর খাবারের স্টল৷ অন্যান্যবারের মতো এই বছরও দুর্গাপুজোর শেষ লগ্নে সবার নজর কাড়বে এই এলাকার অদিবাসী মহিলাদের সিঁদুরখেলা ও দুর্গাবরণ পর্ব৷ এখন থেকেই মেলা গ্রাউন্ডের পুজোর উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি শুরু করছেন আগামী বছরের সুবর্ণ জয়ন্তীর জন্য৷ তাদের দাবি, ২০২৫ সালে চিত্তরঞ্জন পার্কের মেলা গ্রাউন্ডের দুর্গাপুজো গোটা দেশের নজর কাড়বে৷