প্রতিবেদন : জল্পনা আগে থেকেই ছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিএসএফের (BSF) এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলবেন। কথাও বললেন তা নিয়ে।
নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা জানালেন, বাংলায় বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন তিনি। এদিন, বিকেল পাঁচটা থেকে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হয় মুখ্যমন্ত্রীর। বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জির পাশাপাশি রাজ্যের বকেয়া প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকাও দাবি করেন মমতা। তুলে ধরেন পাটশিল্পের সমস্যার কথা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “বিএসএফ আমাদের বন্ধু। ওরা সীমান্তে কাজ করে। রাজ্যের পক্ষ থেকে ওদের যথাযথ সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু ওদের ক্ষমতাবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের করার দাবি জানিয়েছি। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজ্যের বিষয়। সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো হলে রাজ্যের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।” এক্ষেত্রে কোচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলি চালানোর ঘটনার উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, দেশে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো আছে। তার অহেতুক অবনতি করা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টার স্ট্রোক, বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ
পাশাপাশি, বাংলার প্রাপ্য টাকা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা হয়। আমফান, ইয়াস-সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার খাতে প্রচুর টাকা বকেয়া রয়েছে। আবাস, সড়ক যোজনা, ন্যাশনাল হেলথ মিশন, জল জীবন মিশন-সহ বেশ কিছু প্রকল্পের টাকাও পাওনা রয়েছে। সেই টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। “প্রাপ্য টাকা না পেলে রাজ্য চালাব কী করে? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।” জানান মমতা।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয় মোদি-মমতার। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তর আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। কারণ স্কুল, কলেজ খুলে গিয়েছে। দ্রুত তাঁদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
এই বৈঠকে পাটশিল্প নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। পাটকলগুলি নিয়ে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তার পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। মমতা জানান, এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন মোদি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই মাসের শেষেই মুম্বই যাবেন। দেখা করবেন উদ্ধব ঠাকরে ও শরদ পাওয়ারের সঙ্গে। একইসঙ্গে বারাণসীতে গিয়ে ঘাটে প্রদীপ জ্বালানোর পরিকল্পনা আছে বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।