প্রতিবেদন: জর্জ ম্যালোরি এবং অ্যান্ড্রু আরভিন। সালটা ১৯২৪, ৮ জুন। শুরু করেন এভারেস্ট যাত্রা। এরপর কাট টু ১৯৫৩ সালের ২৯ মে। যৌথভাবে বিশ্বে সর্বপ্রথম পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট পর্বত জয় করেন তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারি। কিন্তু সময়ের হিসেবে দেখতে গেলে প্রথম পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশ্যে তার অনেক আগেই ম্যালোরি এবং আরভিন। কিন্তু প্রশ্ন, তাঁরা কি আদৌ এভারেস্টের শৃঙ্গ ছুঁয়েছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। নিখোঁজ ছিলেন ম্যালোরি এবং আরভিন। অনেক পরে ম্যালোরির খোঁজ মিললেও এতদিন আরভিন নিরুদ্দেশ ছিলেন। এবার ঠিক ১০০ বছর পর মিলল নিখোঁজ আরভিনের মোজা-সহ জুতো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটি দল এভারেস্টে একটি বুটের খোঁজ পায়। সেই বুটের সূত্র ধরেই খোঁজ মিলেছে আরভিনের আংশিক দেহাবশেষের।
আরও পড়ুন-নয়ডার স্কুলে যৌননির্যাতন তিন বছরের শিশুকে
ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। তাই ইতিহাসের নিদর্শন ও বোধহয় ফিরে আসে আচমকাই। ঠিক এমন ভাবেই ফিরে এল ১০০ বছর পর এক পর্বতারোহীর জুতো সমেত পা। মাত্র ২২ বছরে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার জন্য যাত্রা করেন তিনি। কিন্তু যাত্রা শুরুর ঠিক পরেই নিখোঁজ হয়ে যান এই অ্যান্ড্রু ওরফে স্যান্ডি। ১৯৯৯ সালে ম্যালোরির দেহাবশেষ পাওয়া গেলেও আরভিনের হদিশ মেলেনি। এবার এভারেস্টের বরফ গলে একটু পা ও জুতো বেরিয়ে এল। তা নজরে পড়ল ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকের তথ্যচিত্র নির্মাতাদলের। এভারেস্টের উত্তর দিকের নীচে রোংবুক হিমবাহে অভিযান চালানোর সময় একটি জুতো খুঁজে পান চিত্রগ্রাহক তথা পরিচালক জিমি চিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পর্বতারোহী এরিখ রোপেকে এবং মার্ক ফিশার। জুতোটি দেখার পর তাঁরা ভাল করে পরীক্ষা করে এর সঙ্গে কাটা পা-ও দেখতে পান। এরপর পরীক্ষা করে বোঝা যায় এটি সেই ১০০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহী অ্যান্ড্রু কমিন আরভিনের পা। জুতোর সঙ্গে যে মোজাটি পাওয়া গিয়েছে তাতে আরভিনের নাম লাল সুতো দিয়ে সেলাই করা ছিল। এতদিন ধরে আরভিনের পরিবারের বংশধরেরা তাঁর দেহের অপেক্ষায় ছিলেন। জানা যায়, আরভিনের কাছে একটি ভেস্ট ক্যামেরা ছিল। সেটার খোঁজ এখনও মেলেনি। যদি কোনও ভাবে সেই ক্যামেরার খোঁজ মেলে এবং তাতে ধরা পড়ে যে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ প্রথম ছুঁয়েছিলেন জর্জ ম্যালোরি এবং অ্যান্ড্রু আরভিন তাহলেই বদলে যাবে ইতিহাস।