প্রতিবেদন: এমন কাণ্ড বোধহয় শুধুমাত্র মোদিরাজ্যেই সম্ভব। প্রতারণা যে এমন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে তা সম্ভবত কল্পনারও অতীত। হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে গুজরাতে চলছিল ভুয়ো আদালত। বিচারক থেকে শুরু করে আইনজীবী, আদালত-কর্মী, সবই ভুয়ো। অবশেষে পর্দাফাঁস। বেআব্রু হয়ে গেল গোটা প্রতারণা চক্রটাই। গ্রেফতার করা হল মূল চক্রীকে। এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে গান্ধীনগরে। ধৃতের নাম মরিস স্যামুয়েল ক্রিশ্চিয়ান। রীতিমতো বিচারক সেজে বসতেন তিনি। প্রতারণা করতেন নিখুঁতভাবে। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিস্মিত বিভিন্ন মহল। নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজ্যজুড়ে। প্রশ্ন উঠেছে, দিনের পর দিন ধরে চলছে এমন মারাত্মক প্রতারণা চক্র। মানুষ ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানো হচ্ছে। কী করছিল প্রশাসন? ডবল ইঞ্জিন গেরুয়া সরকার কি এতদিন কিছুই জানত না? বুঝতে পারেনি কিছুই? নাকি সব দেখেও না দেখার ভান করছিল তারা! নেপথ্যে কি কোনও গোপন যোগসাজশ আছে প্রশাসন এবং প্রতারণা চক্রের মধ্যে?
আরও পড়ুন-মহারাষ্ট্রে টাকা দিয়ে ভোট কেনার খেলায় নেমেছে গেরুয়া শিবির
কেমনভাবে চলত এই ভুয়ো আদালত? গান্ধীনগরে নিজের একটি অফিস আছে স্যামুয়েলের। সেটিকেই ঠিক আদালতের মতো সাজিয়ে তুলেছিল তাঁর লোকজন। সেখানেই বিচারক সেজে বসতেন তিনি। বিভিন্ন অছিলায় লোক ঠকাতেন। কেমন করে ফাঁস হল এই প্রতারণা? ২০১৯ এর একটি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশের নজরে আসে গোটা বিষয়টা। ৫ বছর আগে একটি সরকারি জমি সংক্রান্ত মামলায় রহস্যের গন্ধ পান তদন্তকারীরা। ওই মামলায় আবেদনকারীর পক্ষে রায় দিয়েছিলেন ভুয়ো বিচারক। সেই রায় বা নির্দেশের উৎস খুঁজতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। দেখা যায়, নির্দেশটিই শুধু ভুয়ো নয়, যে আদালত সেটি দিয়েছিল আইনত কোনও অস্তিত্বই নেই তার। পুরোটাই ভুয়ো। তদন্তের গভীরে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, যাদের জমিজমা সংক্রান্ত আদালতে বিচারাধীন, মূলত তাদেরই শিকার হিসাবে টার্গেট করত এই প্রতারণাচক্র। প্রতারণার জাল বিছিয়ে রাখত নিখুঁতভাবে। তারপরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মামলার রায় নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার আশ্বাস দিয়ে সাজানো নকল আদালতে শুনানির টোপ দিত। এমনি করেই জমে থাকা আসল মামলার নকল নিষ্পত্তির চক্র চালাচ্ছিল তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।