প্রতিবেদন: শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে কোনও প্রামাণ্য নথি তাঁর হাতে নেই বলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন প্রকাশ্যে ঘোষণা করার পরই শোরগোল শুরু ওপারের রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে, এরপর তাহলে কি আদৌ ইউনুস সরকারের কোনও বৈধতা থাকে? হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত না হওয়ার অর্থ আওয়ামি লিগ সরকারের পতন হয়নি। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারেরই বা বৈধতা থাকে কীভাবে? সব মিলিয়ে সাংবিধানিক সংকটের মুখে বাংলাদেশ। এই ডামাডোলের পরিস্থিতিতে আবার সংবিধান বাতিলের দাবি ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে অশান্তি শুরু হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, এবার কি তাহলে গৃহযুদ্ধের দিকে পা বাড়াচ্ছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ?
আরও পড়ুন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল নীতিতে জয় রাজ্যের, কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে সুপ্রিম কোর্টের রায়
এদিকে রাষ্ট্রপতির স্বীকারোক্তির পর গভীর অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাক মদতপুষ্ট জামাত শিবির। রাষ্ট্রপতির এই খোলাখুলি মন্তব্যের পরে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতাই এখন বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে। এতে রাষ্ট্রপতির উপরে হাড়ে-হাড়ে চটেছে জামাতপন্থীরা। সেই রাগেই রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে অশান্তি শুরু। বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধাঁচে ছাত্রদের উসকে দিয়ে নতুন আন্দোলনের পথে দেশবাসীকে ঠেলে দিচ্ছে পাকিস্তানপন্থীরা। মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় এই রাষ্ট্রপতি হটাও আন্দোলনই হিংসাত্মক রূপ নেয় আচমকাই। রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে এদিন ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেয় আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যার পরেই প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে তারা। লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন পুলিশের অন্তত ২৫ জন অফিসার-কর্মী। এরমধ্যে ৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। হিংসাত্মক আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা লাঠি চালায় পুলিশও। ছোঁড়ে সাউন্ড-গ্রেনেড। রাতে একদল বিক্ষোভকারী জোর করে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে আবার পুলিশের সঙ্গে বেঁধে যায় সংঘর্ষ। এইসময় সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে এলাকায় হাজির হয়ে যায় সেনাও। এদিকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করে এ সপ্তাহের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এই ডামাডোলের মধ্যে এখন বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি মন্তব্য করেছেন, মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি পদে থাকা না থাকার বিষয়টি কোনও সাংবিধানিক প্রশ্ন হতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।