প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে একের পর এক ঝড় সামলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এর আগে আমফানের সময়ও নবান্নে ছিলেন আর এবার ঘূর্ণিঝড় দানার সময় সারারাত কড়া নজরদারিতে থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দানার আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় যখন রাজ্যবাসী আশঙ্কার প্রহর গুনছে তখন অন্যরকম তৎপরতা ছিল রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে। তিনতলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমে কর্মীদের দম ফেলার ফুরসত ছিল না। উপগ্রহ চিত্রে ঘূর্ণিঝড়ের প্রতিমুহূর্তের অগ্রগতির পাশাপাশি শক্তিশালী ক্যামেরার মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা-সহ গোটা রাজ্যের ছবি এখানে বসেই দেখতে পাচ্ছিলেন দফতরের আধিকারিকরা। রাতভর এই কন্ট্রোল রুম থেকেই রাজ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে রাত জাগলেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা ও অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জাভেদ খান। এছাড়াও মুখ্যসচিব-সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও এদিন নবান্নে রাত্রিবাস করেন। সন্ধ্যা ৬.৩৫টা মিনিট নাগাদ প্রথমবার নবান্নের কন্ট্রোল রুমে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে খোঁজ নেন সেখানে কোন কোন মহিলা কর্মী আছেন। তাঁদের বাড়ি কোথায়। এরপরেই বারাকপুর, বারাসত, সোদপুরের মতো শহরতলির কর্মীদের তখনই ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কলকাতা কর্পোরেশন এবং কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি তিনি নিজেও নজর রাখেন। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করে মন্ত্রীদের নিজের নিজের এলাকায় যেতে নির্দেশ দেন তিনি। কন্ট্রোল রুমে ছিলেন আবহাওয়াবিদ ও আলিপুর আবহাওয়া দফতরের প্রাক্তন কর্তা গোকুল চন্দ্র দেবনাথ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে (CM Mamata Banerjee) বুঝিয়ে দেন ঠিক ক’টার সময় এই ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়বে। এরপরে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন সুন্দরবন অঞ্চলের যেসব এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাব বেশি পড়বে সেখানে নজরদারি সব সময় চালিয়ে যেতে। একাধিক দফতরের সচিবকে ন’টি জেলায় সরেজমিনে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। তাঁদের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ করেন তিনি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। অবস্থা একেবারে স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের জায়গা ছাড়তে নিষেধও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা ক্রিকেট খেলছিলেন, যোগীরাজ্যে মৃত্যু শিশুর
ঘটনাচক্রে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে অনেক মন্ত্রীকে বৈঠক আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। তাঁদের বিভিন্ন জেলা থেকে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা এলাকার নজরদারি করতে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক মণীশ জৈনকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সেচ দফতরের আধিকারিকদেরও ঝড়ের সময় ওইসব এলাকাতে থাকতে হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দেন।