প্রতিবেদন : শুরু করেছিলেন মা। তারপর থেকে ৪৭ বছর ধরে চলছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) বাড়ির কালীপুজো। এবারও নিজের হাতেই সবটা আয়োজন করেছেন মায়ের পুজোর। সঙ্গ দিয়েছেন বাড়ির বউরা। আলপনা আঁকা থেকে মায়ের ভোগ রান্না নিজের হাতে করেছেন। সঙ্গে পুজোর নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে সর্বক্ষণ খেয়াল রেখেছেন। বুধবার নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ির পুজোর প্রস্তুতির ঝলক ভাগ করে নিয়েছিলেন সকলের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার রাতের দিকে নিজের বাড়ির পুজোর ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) লিখেছেন, ‘জ্বালাও আলো, আপন আলো, জয় করো এই তামসীরে।।’ তাঁর সংযোজন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও আমার বাড়ির স্মিতহাস্যবদনা মা কালীর আরাধনায় শামিল হলাম। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত ভক্তের সমাগম এই স্থানকে আরও অনেক পবিত্র করে তুলেছিল। মায়ের স্নিগ্ধ হাসির পরশ এবং আশিস যেন বাংলার সকল পরিবার পায়–এই প্রার্থনা জানালাম। আদ্যাশক্তির আশীর্বাদে সকল অশুভ শক্তির বিনাশ হোক।
এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোর থিম ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার৷ অসাধারণ হাতের কাজ ছিল মাটির ওই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারগুলির উপর৷ সঙ্গে ছিল ধানের ছড়া৷ তৈরি হয়েছে অপূর্ব গ্রাম্য পরিবেশ৷ আর কে না জানে বাংলার মা-বোনেরা এই প্রকল্পকে মাথায় করে রেখেছেন৷ বৃহস্পতিবার দিনভর ছিল চূড়ান্ত ব্যস্ততা। দুপুর থেকেই দফায় দফায় পুজোর সবটা ঠিকঠাক আছে কি না নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দেখে নেন। বিকেল হতে না হতেই একে একে আসতে শুরু করেন অভ্যাগতরা। মেয়ে আজানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ব্রহ্মময়ী মাকে প্রণাম করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই অভিষেক প্রণাম করেন মুখ্যমন্ত্রীকে৷ সম্প্রতি চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চোখে কালো চশমা। সকলের সঙ্গে করলেন কুশল বিনিময়। প্রায় রাত ৯টা নাগাদ শুরু হয় যজ্ঞ৷ মুখ্যমন্ত্রীর একদিকে অভিষেক, আরেক দিকে তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সঙ্গে বাড়ির ছোটরাও৷ এর মধ্যেও অভ্যাগতদের আনাগোনা লেগেই আছে৷ শুধু তাই নয়, এদিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল আমজনতার জন্য৷ একেবারে বড় রাস্তা থেকে উপছে পড়েছে ভিড়৷ হাজারও মানুষ সারিবদ্ধভাবে একে একে ঢুকছেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজো দেখতে৷
আরও পড়ুন-বৃহস্পতিবার সাতসকালেই ধূসর আকাশ, রাতে যেন গ্যাসচেম্বার
এদিন বিকেলে এসে ঘুরে যান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর একে একে আসতে থাকেন দলের মন্ত্রী-বিধায়কেরা। চলে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। আসেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য সচিবরা৷ আসতে থাকেন সপরিবার শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরাও৷
দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম তখন নিজেদের মধ্যে আড্ডায় মজে৷ ছিলেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ মজুমদার, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ৷ সাংবাদিকরাও ছিলেন৷ এক ফাঁকে ঘুরে যান কুণাল ঘোষ৷ ঠিক তার পিছনের সারিতেই তখন আড্ডা চলছে জয়প্রকাশ মজুমদার, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়-সহ বাকিরা৷ সেখানে মাঝেমধ্যে এসে যোগ দিচ্ছেন অরূপ-ফিরহাদ৷ এসেছিলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী৷ ছিলেন টালিগঞ্জের বেশ কিছু শিল্পী ও কলাকুশলী৷ এছাড়াও শিল্পপতি-সহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা এদিন ঘুরে যান মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে৷ পুজোর যাবতীয় ঝক্কি সামলেও মাঝেমধ্যেই অভ্যাগতদের আপ্যায়নে ব্যস্ত থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷