মুম্বই, ২ নভেম্বর : সিরিজের ফয়সালা আগেই হয়ে গেলে নিয়মরক্ষার ম্যাচ নিয়ে সাধারণত কারও আগ্রহ থাকে না। কিন্তু মুম্বইয়ে অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে। শনিবার শেষবেলায় একটা করে উইকেট পড়ছে আর ওয়াংখেড়েতে উৎসব দ্বিগুণ হচ্ছে। শেষমেশ খুশির এই আবহেই শেষ হল দ্বিতীয় দিনের খেলা। পরিস্থিতি অনেকটাই ভারতের অনুকূলে। রবিবাসরীয় সকালে নিউজিল্যান্ডের বাকি উইকেট তুলে নিতে পারলেই
হল। সেক্ষেত্রে হয়তো বড় টার্গেট পার করতে হবে না ভারতকে।
দিনের শেষে নিউজিল্যান্ড ১৭১-৯। আপাতত তারা ১৪৩ রানে এগিয়ে। এখান থেকে দলকে কতদূর নিয়ে যেতে পারেন আজাজ প্যাটেল (৭ নট আউট) ও উইলিয়াম ওরুর্কি? পরিস্থিতি বলছে বেশি এগোনো সম্ভব নয়। বল এখানে দেদার ঘুরছে। অনেকটা বাউন্স করছে। এই অবস্থায় প্রতিটি বল ব্যাটারদের জন্য চ্যালেঞ্জ। অবশ্য এই চ্যালেঞ্জ থাকছে ভারতের জন্যও। এই উইকেটে শ’দেড়েক রান তাড়া করাও কঠিন। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড দলে যখন আজাজ, ইস সোধি ও ফিলিপসের মতো স্পিনার আছে।
আরও পড়ুন-মার্কিন আইটি কোম্পানিতে এক ধাক্কায় ১৩০০ জন ছাঁটাই
নিউজিল্যান্ড এক সময় ৯৪-৩ ছিল। তার আগে অধিনায়ক লাথাম (১) বোল্ড হয়েছিলেন আকাশ দীপের বলে। কনওয়ে (২২) আর ইয়ং (৫১)প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হয়নি। রাচিন রবীন্দ্র (৪) দুম করে ফর্ম হারিয়ে ফেলেছেন। পরের দিকে ড্যারেল মিচেলের (২১) আউট হওয়াটা নিউজিল্যান্ডের জন্য ভারি পড়ে গেল। এরপর ফিলিপস (২৬) কিছু রান পেয়েছেন। বাকিরা জাদেজা ও অশ্বিনের মোকাবিলয় বর্থ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া জাদেজা ৫২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। ৬৩ রানে ৩ উইকেট অশ্বিনের। একটি করে উইকেট আকাশ ও ওয়াশিংটনের।
আগের দিনের ৮৬-৪ নিয়ে খেলা শুরু করে ভারত একসময় ১৮০-৪ ছিল। ম্যাচে তখন রোহিতরাই চালকের আসনে। শুভমনের সঙ্গে এই জুটিতে ৯৪ রান উঠে যাওয়ার পর ঋষভ এলবি হয়ে গেলেন ইস সোধির বলে। ৫৯ বলে ৬৯ করে যান তিনি। মুশকিল হচ্ছে যে এরপর ভারতীয় ইনিংস আর বেশি দূর এগোয়নি। স্রেফ ৮৩ রান যোগ হতেই বাকি পাঁচ উইকেট চলে গেল। শেষমেশ ২৮৩। প্রথম দফায় রোহিতদের লিড ছিল ২৮ রানের।
শুভমন (৯০) নিশ্চিত সেঞ্চুরি মিস করেছেন। সকালে খেলা শুরু হয়েছিল আজাজ প্যাটেলের প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি দিয়ে। ঋষভ শুভমনের থেকে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। আটটি ৪ ও দুটি ছক্কায় রীতিমতো চাপে ফেলে দেন নিউজিল্যান্ড স্পিনারদের। নিজের পা জোড়াকে চমৎকার ব্যবহার করলেন তিনি। স্টেপ আউট করলেন মেপেঝুঁকে। হাফ সেঞ্চুরির পর ঋষভের একটা ক্যাচ পড়েছিল। ক্যাচ অবশ্য পড়েছে শুভমনেরও।
লালমাটির এই উইকেটে বল ঘুরেছে প্রথম দিন থেকে। সেই সঙ্গে বাউন্সও থাকছে স্পিনারদের জন্য। ফলে জাদেজার মতো বোলাররা ফ্লাইট দেওয়ার থেকে বল মাটিতে আছড়ালেন বেশি। এই বাউন্সের জন্যই বারবার ব্যাটের আশপাশ দিয়ে বল বেরিয়ে গিয়েছে। নিউজিল্যান্ড ইনিংসে অশ্বিন, ওয়াশিংটনকে উইকেটের পিছনে চমৎকার সামলালেন ঋষভ। তবে ওয়াশিংটনের থেকেও বেশি বাউন্স পেয়েছেন অবশ্য অশ্বিন। সেটা তাঁর উঁচু থেকে বল ছাড়ার জন্য।
একটা সময় মনে হচ্ছিল ভারত বড় লিড নিতে পারবে। কিন্তু লোয়ার অর্ডার ব্যার্থতায় সেটা হয়নি। তবু ২৮ রানের লিড নেওয়া গিয়েছে শুভমনের জন্য। তিনি যেমন উইকেট আগলে রেখেছিলেন, তেমনই স্কোর বোর্ডকে এগিয়ে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৯০ রান করে আজাজের বলে আউট হয়েছেন পাঞ্জাব ব্যাটার। ১৪৬ বলের ইনিংসে তিনি সাতটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন। শুভমন যখন আউট হলেন, ভারতের রান ছিল ২২৭।
আরও পড়ুন-তরুণীর রহস্যমৃত্যু আটক লিভ-ইন পার্টনার
রবীন্দ্র জাদেজা ১৪, সরফরাজ খান ০, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আকাশ দীপ ০। নিচের দিকের ব্যাটাররা যখন উইকেট দিয়ে যাচ্ছেন, তখন একটা দিকে প্রতিরোধ গড়েছিলেন ওয়াশিংটন। তিনি শেষ পর্যন্ত ৩৮ রানে নট আউট থেকে যান। নিউজিল্যান্ড বোলারদের মধ্যে আজাজ ১০৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। মিচেল স্যান্টনারের না খেলার পুরো সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন তিনি। তবে দিনের শেষে একটু হলেও এগিয়ে ভারত। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভেসে থাকতে হারা সিরিজেও মুম্বই টেস্ট জেতা জরুরি রোহিতদের।