কমল মজুমদার, জঙ্গিপুর: অবশেষে ফারাক্কা ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের পানীয় জলের সমস্যার সুরাহা হতে চলেছে। প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বুধবার রাজ্য সরকারের তরফে ফারাক্কা ব্লকের বেওয়া-১ অঞ্চলে একটি পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস করা হল। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম, সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস, সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস, ফারাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিলুফা ইয়াসমিন-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী। পিএইচই দফতর সূত্র জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ফারাক্কায় ফিডার ক্যানেলের পশ্চিম পাড়ের প্রায় ২৫ হাজার পরিবারের ১.৩০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। আগামী দু’বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য স্থির হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ২০৫১ পর্যন্ত ওই এলাকার মানুষের পানীয় জলের সঙ্কট হবে না বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য প্রথম পর্যায়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য সরকার মোট ১৫০ কোটির বেশি বরাদ্দ করেছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাইপ লাইনের সাহায্যে বেওয়া-১, বেওয়া-২, বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়াও ইমামনগর এবং বেনিয়াগ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছুটা এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে যাবে। এর ফলে ফারাক্কার ফিডার ক্যানেলের পশ্চিম পাড়ের মানুষদের দীর্ঘদিনের জলসঙ্কট দূর হতে চলেছে।’
আরও পড়ুন-শীতের গতি শ্লথ, জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেঘমুক্ত আকাশ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে বেওয়া এলাকায় একটি জল শোধনাগার ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় সাতটি ওভারহেড রিজার্ভার এবং গুমানি নদীর উপর একটি ইনটেক ট্যাঙ্ক তৈরি করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওভারহেড রিজার্ভারগুলো থেকে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া হবে। বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফরাক্কা ফিডার ক্যানেলের পশ্চিম পাড়ের বিস্তীর্ণ অংশে পাথুরে জমি থাকার কারণে এখানে সহজে বোরিং করে জল পাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই গুমানি নদীর প্রবাহিত জলকে শোধন করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার নিয়েছে।’ স্থানীয় মানুষকে সতর্ক করে বিধায়ক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বহু কোটি টাকার এই জলপ্রকল্পের কাজ করার জন্য কলকাতা থেকে কন্ট্রাক্টর নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু তাঁকে চাঁদা বা অন্য কোনও জুলুমবাজির শিকার হতে না হয় তা সকলকে সুনিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখবেন, কন্ট্রাক্টরের কাছে কেউ অন্যায় আবদার করলে পুলিশ প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলব।’