অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek banerjee) যোগ্য নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত হয়েছে ২৯টি আসনে। সব ক’টি আসনে জয় সুনিশ্চিত করতে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সমস্ত রাজনৈতিক প্রয়াস মানুষের মনে দাগ কেটেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া রাজনৈতিক কর্মসূচি জনজোয়ার ঐতিহাসিক গুরুত্ব পেয়েছে এবং দারুণভাবে সফল হয়েছে। আবারও জনজোয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে সব থেকে বেশি ভোটে জয়ী হয়ে বাংলার বুকে নয়া রেকর্ড করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অপ্রতিরোধ্য নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছে বাংলা জুড়ে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek banerjee) সত্যিই কি পদ্ধতিগত পার্থক্য আছে? এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। সেটা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর। যদি না থাকে, তাহলে তো মিথ্যে বলা হবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল। আমার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ নেই। আমি তো বারবার বলি, এখনও বলছি, আমার গলা কেটে দিলেও ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বেরবেই। তৃণমূলে দুটো দল নেই। আর দুটো, তিনটে, চারটে, যে ক’টা দলের কথাই বলুন না কেন, আমার কাজ সব জায়গায় ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো।” লোকসভা নির্বাচনের আগে এক মুখোমুখি ইন্টারভিউয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় দ্বন্দ্বের প্রশ্নে জবাব দিয়ে বলেছিলেন, ‘সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের এত নেতা, কর্মী, সমর্থক। তাঁদের কারও সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ-বিষয়ে আমি তাঁদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা জানাই।’
বামফ্রন্টের আমলে পিছনের সারিতে চলে যাওয়া এই বাংলাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আবার সামনের সারিতে অধিষ্ঠিত করেছেন, সেই লড়াইয়ের কথা বাংলার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যম হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সাফল্য, মমতার আগামী দিনের কর্মসূচি প্রচারের মূল দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের এ-মুহূর্তে তরুণ তুর্কি অপ্রতিরোধ্য সেনাপ্রধান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek banerjee)। সেইমতো তাঁর যুববাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মানুষের কাছে যেতে, মানুষকে বোঝাতে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে উন্নয়নযজ্ঞ চলছে, সেই উন্নয়নের বার্তা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়ে মমতার জয় সুনিশ্চিত করে তোলার পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর (Abhishek banerjee) অবদান কারও থেকে কম নয়। তাঁর দুর্বার ডাকেই তৃণমূলের হাত শক্ত করতে সমর্থনের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। তাই তো, যতই তলে তলে জোট গড়ুক সিপিএম-বিজেপি, মানুষ বুঝেছিল, অত্যাচারী সিপিএমের সঙ্গে জুমলা বিজেপি আর নয়, বাংলার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে যার হাত ধরে তাঁকেই বাংলার কুর্সিতে দরকার। যুব সংগঠনই দলের ভবিষ্যৎ। যুব সংগঠনের বৃদ্ধি না হলে, নতুন মুখ উঠে না এলে, যে-কোনও দলেই পচন ধরে। আর মানুষের পাশে, মানুষের কাছে গেলে, দলে নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি হতে বাধ্য। দলীয় সদস্যপদ নবীকরণ হওয়া মানেই দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠা। সেই সরল সাধারণ মন্ত্রই বাংলার বলিষ্ঠ নেতা হিসাবে রাজ্যের প্রতিটি যুব শাখার অন্দরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পেরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বয়সে নবীন হলেও, রাজনৈতিক বিচক্ষণতার সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সমর্থ হয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। নেত্রীর দেখানো পথই তাঁর এগিয়ে চলার সোপান। তাই তো সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, শৃঙ্খলা আর অনুশাসনই দলের মূলমন্ত্র। বলেছিলেন দলের অন্দরে অশান্তি-বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত নয়। চূড়ান্ত করে দিয়েছিলেন নেতা-কর্মীদের চলার পথ। তাঁর নির্দেশনামার প্রথমেই ছিল, মানুষের জন্য কাজ। বলেছিলেন, মানুষের জন্য জীবনপাত করুন, স্বার্থসিদ্ধি মানব না। রাজ্য সরকারের কর্মসূচি ও সাফল্যের কথা বুথে বুথে পৌঁছে দিতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত শাখা সংগঠনের মাধ্যমেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা গ্রামেগঞ্জে, শহর-শহরতলির অলি-গলি, তস্য গলিতে ছড়িয়ে পড়বে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মধ্য দিয়ে যদি এই বার্তা মানুষের মনে প্রবেশ করানো যায়, তার প্রভাব পড়বে বহুগুণ। দলের প্রতি, দলনেত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস দ্রুত বাড়তে থাকবে। দল বাড়বে। সরকারের উন্নয়নমুখী কাজের প্রচারে যোগ দিতে ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও ভিড় জমাতে শুরু করবেন। তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ছাঁকনির কাজ করার গুরুদায়িত্ব নিতে হবে যুবকর্মীদের। আরও একটা বড় কাজ, ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলা। কেননা, ছাত্র সংগঠনের পরের ধাপই যুব সংগঠন। ছাত্র নেতা-কর্মীদের যুবস্তরে নিয়ে আসারও তৈরি করার দায়িত্ব তো যুবনেতা-কর্মীদেরই।
আরও পড়ুন- আরজি কর মামলার শুনানি পিছিয়ে আজ
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek banerjee) প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, মূল সংগঠনের সঙ্গে নীতিগত ফারাক বা কোনও সংঘাত তিনি চান না। এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সর্বস্তরে। মনে রাখতে হবে যুব সংগঠন দলের ডানহাত। এ হাত যত শক্ত হবে, দল ততটাই মজবুত হবে। কিন্তু মূল সংগঠনের সঙ্গে স্বার্থ-সংঘাত থাকা মানে দল নড়বড়ে হয়ে পড়া। যুব শাখার একটা বিশেষ দায়িত্ব থাকে। দলীয় নীতি মেনে সেইসব কাজের মাধ্যমেই দলকে শক্তিশালী করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রাজ্যের উন্নয়নের প্রচারে মুখ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে এক, দুই বা তিন বলে কিছু নেই। দলের শীর্ষে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নিচে আছেন কর্মীরা। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেত্রীর কর্মযজ্ঞকে সফল রূপায়ণে সহায়তা করব। সেই ব্রত নিয়েই তিনি এগিয়ে চলেছেন। যে-মন্ত্রে তিনবার বিধানসভায়, পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় এসেছে, সেই একই মন্ত্রে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এ এসেছে সাফল্য। বাংলার প্রাপ্য বকেয়া আদায় করা, জনবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গর্জন করে রুখে দাঁড়ানো। বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে বিভেদমূলক শক্তির পতন সুনিশ্চিত করাই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য।
ইতিহাস বলে, বিজেপি-র মূল চালিকা শক্তি আরএসএস ও তার তৎকালীন দোসর হিন্দু মহাসভা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেনি। বরং ইংরেজদের পক্ষেই ছিল তারা। শুধু তাই নয়, দেশভাগের মূলে প্রকৃতপক্ষে ওই দুই সংগঠনের নেতাদের ভূমিকাই ছিল আসল। অথচ, সেই আরএসএস-জাত বিজেপি-র অধুনা নেতারা দেশভক্তির পরাকাষ্ঠা দেখাতে কি না করছেন! বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর শাসনে ভারতের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, তীব্র বেকারত্ব ও ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ধাক্কায় দেশবাসীর নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়েছে। সাধারণ মানুষকে দেওয়া প্রায় কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করতে পারছেন না মোদি ও তাঁর দোসররা। এই ব্যর্থতা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে ধর্মকে হাতিয়ার করছেন গেরুয়া নেতারা। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতবাসীকে বিভক্ত করে নিজেদের আসন নির্বিঘ্ন রাখতে মরিয়া তারা।
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে এই রাজ্য থেকেই বিজেপির পতন শুরু হয়েছে। আগামীতে তাদের পুনঃপতনের রাস্তাও তৈরি হচ্ছে।