‘প্রতিটি মামলাই স্বতন্ত্র, শিখেছি এখানেই’ কাজের শেষদিনে আবেগপ্রবণ বিদায়ী প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়

অবসরের আগে শুক্রবার শেষ কাজের দিনে ৪৫টি মামলার শুনানি করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিদায় নিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়৷ রবিবার ১০ নভেম্বর তাঁর অবসরগ্রহণের দিন৷

Must read

প্রতিবেদন: নিজের কর্মজীবনের শেষ দিনটিতেও ব্যস্ততার বিরাম নেই বিদায়ী প্রধান বিচারপতির। অবসরের আগে শুক্রবার শেষ কাজের দিনে ৪৫টি মামলার শুনানি করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিদায় নিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়৷ রবিবার ১০ নভেম্বর তাঁর অবসরগ্রহণের দিন৷ তার আগে এদিনই ছিল সুপ্রিম কোর্টে তাঁর শেষ কাজের দিন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসের সেরিমনিয়াল বেঞ্চে বসে অবসরের প্রাকমুহূর্তে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন তিনি৷ বললেন, যদি কাউকে কোনওদিন আঘাত দিয়ে থাকি, তাহলে ক্ষমা করে দেবেন৷ আমি ইচ্ছে করে কাউকে আঘাত দিতে চাইনি। একথা যখন বলছেন প্রধান বিচারপতি তখন তাঁর গলা ধরে এসেছে৷ আর গোটা এজলাসে পিন পড়ার নিস্তব্ধতা৷ ওই মুহূর্তে মাথা নিচু করে চোখের জল মুছতে দেখা গেল অনেক প্রবীণ আইনজীবীকেও৷

আরও পড়ুন-সমঝোতা করে মামলার নিষ্পত্তি নয়, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

বিদায়ী প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বললেন, আগামিকাল থেকে আর রায়দান করব না৷ এটা ভেবে নিজেরই কিছুটা অবাক লাগছিল৷ তবে এটুকু বলতে পারি, আমি সন্তুষ্ট৷ যেদিন প্রথম শীর্ষ আদালতে এসেছিলাম, সেদিন একেবারে শেষ সারিতে বসে দেখেছিলাম আমার চোখের সামনে বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ বিখ্যাত আইনজীবীরা কীভাবে একটার পর একটা মামলায় সওয়াল করছেন৷ তাঁদের থেকে শিখেছি কীভাবে আদালতে আচরণ করতে হয়৷ তারপরে আপনারা, আমাদের বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা আমাকে শিখিয়েছেন জীবনবোধ৷ আপনাদের থেকে আমি প্রতিদিন শিখেছি৷ বুঝতে পেরেছি, প্রতিটি মামলাই স্বতন্ত্র, একটি অন্যটির থেকে পুরো আলাদা৷ কোনও একটি মামলার সঙ্গে অন্য একটি মামলার হুবহু মিল খোঁজা ঠিক নয়৷ আইনজীবীদের ভিড়ে ঠাসা এজলাসের দিকে তাকিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, আমার অবসরের মুহূর্তে এত লোক জড়ো হয়েছেন দেখে আমি অভিভূত, কৃতজ্ঞ৷

আরও পড়ুন-জগন্ময়ী জগদ্ধাত্রী

শুক্রবার বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বিদায়লগ্নে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা থেকে শুরু করে কপিল সিবাল, অভিষেক মনু সিংভি, কেসি বেণুগোপালের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা৷ কপিল সিবাল বলেন, তাঁর ৫২ বছরের আইনজীবী জীবনে তিনি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের মতো কোনও বিচারপতি দেখেননি৷ গোটা এজলাসকে হাসিয়ে অভিষেক মনু সিংভি বলেন, আপনার তারুণ্যের রহস্য কী? বিদায়বেলায় এটা অন্তত বলে যান৷ অভিষেক সিংভির কথার সূত্রেই একই কথা শোনা গেল দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার মুখেও। পরবর্তী প্রধান বিচারপতির সরস মন্তব্য, চন্দ্রচূড়ের তারুণ্যের রহস্য নিয়ে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও প্রবল কৌতূহল আছে৷ একবার অস্ট্রেলিয়াতে আমাকে লোকজন ছেঁকে ধরে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বয়স ও তারুণ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিপাকে ফেলে দিয়েছিল প্রায়৷ এই কথোপকথনে হেসে ওঠে গোটা এজলাস৷ বিদায়লগ্নে প্রতিদিনের মতোই সবাইকে হাতজোড় করে নমস্কার করে শেষবারের মতো প্রধান বিচারপতির এজলাস ছাড়েন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়৷

Latest article