মোদিরাজ্যে হাসপাতালে অভিনব ঠগবাজির শিকার গ্রামের অজ্ঞমানুষ

জোর করে অ্যানজিওপ্লাস্টি, প্রাণ হারালেন ২ জন

Must read

প্রতিবেদন: মোদিরাজ্যে (Gujarat) স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব ভয়ঙ্কর দুর্নীতির শিকার হয়ে প্রাণ হারালেন ২ নিরীহ গ্রামবাসী। অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন আরও ৫ জন। সাদাসিধে গ্রামবাসীদের অজ্ঞতাকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে অভিনব কায়দায় লোক ঠকানোর ফাঁদ পাতা হয়েছিল গুজরাতের আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে। সেই সঙ্গে বলপ্রয়োগও। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সুবিধা আদায় ও মোটা অঙ্কের টাকা হাতাতে জোর করে অ্যানজিওপ্লাস্টি করা হয় ৭ গ্রামবাসীর। অস্ত্রোপচারের পরেই মৃত্যু হয় দু’জনের। আইসিইউতে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও ৫ জন। গ্রামবাসীদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়েই সম্পূর্ণ ভুল বুঝিয়ে অপারেশন টেবিলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। তারপরে ভয় দেখিয়ে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। এই ঘটনার কথা চাউর হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। হাসপাতালে শুরু হয় বিক্ষোভ। শুরু হয় ভাঙচুর। গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। অভিযোগ, কোনওরকম অসুস্থতা বা সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে রাজ্যের বিজেপি সরকারকেই। অভিযোগ, সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পে রাজ্য প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারির অভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ব্যাপক দুর্নীতি। প্রশ্ন উঠেছে, এই ধরনের ভয়ঙ্কর দুর্নীতির নেপথ্যে কি প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে গেরুয়া প্রশাসনের, নাকি এর সঙ্গে যুক্ত শাসকদলেরই প্রভাবশালীরা? লক্ষণীয়, বছর দুয়েক আগেও এই একই হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠেছিল এই ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা। ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটা? জানা গিয়েছে, ১০ নভেম্বর মহসেনা জেলার কাদির বোরিসানা গ্রামে আয়োজন করা হয়েছিল এক স্বাস্থ্যশিবিরের। উদ্যোক্তা ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই। সেখানেই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে হাজির করানো হয়েছিল বহু গ্রামবাসীকে। সরল বিশ্বাসে তাঁরা এসেছিলেন শিবিরে। তাঁদেরই মধ্যে থেকে ১৯ জনকে চিকিৎসকরা বলেন, আরও কিছু পরীক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাওয়া জরুরি। সেইসঙ্গে আশ্বাস দেওয়া হয়, যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বিনা খরচেই। তখন কিন্তু সরল গ্রামবাসীরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি, তাঁদের সামনে রেখে কতবড় প্রতারণার ছক সাজিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে নিয়ে এসে প্রথমে অ্যানজিওগ্রাফি করা হয় ১৯ জনের। তারপরে অ্যানোজিওপ্লাস্টি করানো হয় ৭ জনের। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ডা.ভাজিরানি নামে এক চিকিৎসক অ্যানপজিওপ্লাস্টি করেছিলেন। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, স্টেন্ট বসানোর পরেই মৃত্যু হয় দু’জনের। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গেসঙ্গেই গ্রামবাসীরা হাসপাতালে ছুটে এসে ভাঙচুর চালায়। অবস্থা সামাল দিতে এবং পুরো বিষয়টি চাপা দিতে হাসপাতালে ছুটে আসতে হয় প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যদফতরের প্রধানকেও। কিন্তু হাসপাতাল ততক্ষণে ডাক্তার-শূন্য। নেই ডিরেক্টর বা কোনও পদস্থ কর্তাও। এখনও কোনও গ্রেফতারের খবর নেই।

আরও পড়ুন: অভিযুক্ত সাগর দত্ত মেডিক্যালের চিকিৎসক, পিজিটি হয়েও প্রাইভেট প্র্যাকটিস

Latest article