অনুপম সাহা, দিনহাটা: স্বাধীনতার পরেও পরাধীন তাঁরা। সংবিধানের মৌলিক অধিকার তাঁদের জন্য নয়। কথা বলা, চলা ফেরা সবই নিয়ন্ত্রিত। তাঁদের জীবন যেন আটকে রয়েছে দমবন্ধ এক অন্ধকার গুহায়। কাঁটাতারের এপারে থাকা বাসিন্দা। সবক্ষেত্রেই তাঁদের বিএসএফের (BSF) অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
কাঁটাতারহীন উন্মুক্ত সীমান্তবর্তী গ্রাম দরিবশ, জারিধরলা, ভোরামপয়েস্থী ও বড়াইবাড়ি, সংলগ্ন আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৯২৬, ৯২৭ ও ৯২৮ নম্বর। জনসংখ্যা প্রায় ৮/১০ হাজার। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া না থাকার দরুণ বিএসএফ থেকে মূল সীমান্ত এলাকা থেকে ২-৩ কিমি আগেই অস্থায়ী কাঁটাতার দিয়ে চেকপোস্ট (Check post) বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-Health Center: দুর্গম বক্সা পাহাড়ে চালু স্বাস্থ্যকেন্দ্র
বাড়িতে আত্মীয়স্বজন এলেও বিএসএফের (BSF) খাতায় নাম নথিভুক্ত করতে হয়। এই গ্রামগুলি ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতেও পিছেয়ে যান অনেকে। এই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের চিকিৎসা, কাজকর্ম ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য বিএসএফ-এর চেকপোস্ট গিতালদহ বাজার অথবা দিনহাটা শহরে যেতে হয়। তাঁদের যাতায়াতের সময় গ্রামবাসীদের ভোটার কার্ড জমা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হয়। এসবেই মূল কাজের সময় পেরিয়ে যায়। তবে বড় সমস্যা দেখা দেয়, বাড়িতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, পোশাক-আশাক ও জমির চাষাবাদের সার-বীজ আনা নেওয়ার সময়। বিএসএফের অনুমতি ছাড়া ১ কেজির বেশি নুন আনা যায় না এপারে। দরিবশ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কালাম (Abdul Kalam) বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য এবং প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য বিএসএফের চেকপোস্ট গিতালদহ বাজার বা দিনহাটা শহরে যাতায়াত করতে হয়। এতে যাওয়া-আসার সময় ভোটার কার্ড জমা ও নাম এন্ট্রি করতে হয়। অনেক সময় দিনহাটায় প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে সময় লাগে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে ঘাট বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন আর বাড়ি ফেরার ফলে অন্য মানুষের বাড়িতে রাতে থাকতে হয়।”