তুহিন শুভ্র আগুয়ান, নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রামে এবার নিজের বুথেই পরাজিত হয়ে তৃণমূলের ওপর হামলা চালাল গদ্দার অধিকারী ও তার গুন্ডারা। রবিবার নন্দীগ্রাম- ১ ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড় কাণ্ডপসরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচন ছিল। সেখানে খোদ গদ্দারের নিজের বুথে গোহারান হারল বিজেপি। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের নন্দনায়েকবাড়ের ভোটার। সেখানে সমবায় ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন অনিমেষ দাস। ভোটের ফল প্রকাশ হতেই তৃণমূলের প্রার্থী বিজেপির প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। এছাড়াও তৃণমূলের নদীগ্রাম ১-এর ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের নিজের এলাকার তিনটি আসনেই জয়লাভ করে তৃণমূল। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুষ্কৃতীদের দিয়ে তৃণমূলের ওপর আক্রমণ চালায়।
আরও পড়ুন-ডাক্তারদের কাজের লাইভ স্ট্রিমিং চাই
এদিন সমবায় থেকে কিছুটা দূরে দুর্গাপুর আর আই মোড়ের কাছ থেকে যখন নন্দীগ্রাম- ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ যাচ্ছিলেন ঠিক সেই সময় পেছন থেকে হাতে বাঁশ, লাঠি নিয়ে একাধিক বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করে তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষজন ছুটে আসতেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এদিকে গুরুতরভাবে জখম অবস্থায় স্থানীয় মানুষজন আক্রান্ত তৃণমূল নেতাকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘাড়ে গভীরভাবে চোট পেয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। দুষ্কৃতীদের মারে দীর্ঘক্ষণ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে ছিলেন তিনি। স্থানীয়দের তৎপরতায় কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন ওই নেতা। আক্রান্ত তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ জানান, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হাতে বাঁশ, লাঠি, রড নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। গদ্দার অধিকারীর নিজের বুথে আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করেছে। এটা ও কল্পনাও করতে পারেনি। এছাড়াও আমার নিজের এলাকার তিনটে বুথে তৃণমূল জয়লাভ করেছে। এটাও মেনে নিতে পারেনি। সেই রাগে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। দলের নেতৃত্বকে সবটা জানিয়েছেন বাপ্পাদিত্য। খবর পেয়ে তাঁকে ফোন করেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। দল পাশে আছে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
জানা গিয়েছে, ওই সমবায় সমিতির মোট আসন সংখ্যা ১২টি। যার মধ্যে ৮টি আসন দখল করে বিজেপি।
আরও পড়ুন-রেশনে বকেয়া ১২,৭১৪ কোটি, কেন্দ্রকে কড়া চিঠি রাজ্যের
বাকি চারটি আসন পায় তৃণমূল। কিন্তু তাতেও বাঁধন ছাড়া বিজেপি। নৃশংস ভাবে হামলা চালাল তৃণমূলের ওপর। গদ্দারের নিজের বুথেই মানুষের রায় বুঝতে পেরে বিজেপির এরূপ আচরণ বলে দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের ওপর এরূপ আক্রমণের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা শামসুল ইসলামের নেতৃত্বে নন্দীগ্রাম থানা ঘেরাও করা হয়। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে এই দাবি জানান তাঁরা। নন্দীগ্রাম বাজারে প্রতিবাদ মিছিলও বেরোয়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আহত ব্লক সভাপতিকে দেখতে যান তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিজেপি মানুষের রায় বুঝতে পেরে এই ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে। মানুষ বিজেপিকে আর চাইছে না। বিরোধী দলনেতার বুথেই তৃণমূল জয়লাভ করেছে। তৃণমূলের ওপর এই ধরনের আক্রমণকে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।