প্রতিবেদন : আরজি কর-কাণ্ডে ডাক্তারি পড়ুয়ার নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় ‘রাত দখল’ থেকে শুরু করে ‘দ্রোহের কার্নিভালে’র নামে নাটক করতে নেমেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে তাঁরা ছিনিমিনি খেলেছেন, রাজনীতি করেছেন। সময় গড়াতেই খুলে যাচ্ছে তাঁদের মুখোশ। এক এক করে ফাঁস হচ্ছে বিদ্রোহীদের কীর্তিকলাপ। দ্রোহের কার্নিভালের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন ডাক্তার শৌনক কুণ্ডু। এক মহিলার উপর অত্যাচারের ঘটনায় সুবিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন যিনি, তিনিই এবার মধুচক্রের আসরে হাতেনাতে ধরা পড়লেন।
আরও পড়ুন-পরিবর্তনের ভোট মহারাষ্ট্রে
চারজন মহিলাকে নিয়ে সুভাষগ্রামের একটি হোটেলে গিয়েছিলেন কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পিজিটি শৌনক কুণ্ডু। জমিয়ে চলছিল মধুচক্রের আসর। পুলিশ সেখানে রেড করায় জালে ওঠে ‘বিপ্লবী ডাক্তার’। গুণধর ডাক্তারবাবুই কি না হোটেলে মহিলাদের নিয়ে ‘দ্রোহের রাত্রিবাস’ করতে গিয়েছিলেন! ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই এই ঘটনায় কটাক্ষ করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে ভাল মানুষের মুখোশ-পরা ডাক্তারবাবুর প্রকৃত চেহারাটা প্রকাশ্যে এসে গেল। সেইসঙ্গে পরিষ্কার হয়ে গেল যে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট আসলে কাদের শেল্টার দিচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের আন্দোলনের প্রথম সারিতে দেখা গিয়েছে ডাঃ শৌনককে। তাঁর সঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের পিজিটি ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া, ডাঃ সোহম মণ্ডলদের ছবি তুলে ধরে তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে।
আরও পড়ুন-হামসাফার এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা
এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, কোন ডাক্তার কাদের নিয়ে হোটেলে গিয়ে শুয়েছিল, সেই রাত্রিবাসটা সংবাদমাধ্যমে দেখান। অনেক তো লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি তুলেছিলেন, এখন ওই সিসিটিভি ফুটেজটা দেখান। এরাই তো রাত দখলের নাটক করেছে। একটি দুঃখজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে অনেকে নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তার মধ্যে অনেক বাম-অতিবাম রয়েছে। এখন প্রশ্ন, যিনি আরজি করের ঘটনায় ডাক্তার পড়ুয়ার মৃত্যুতে সুবিচার চেয়ে আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন, তিনি কোন নীতিতে দ্রোহের রাত্রিবাস করতে গেলেন মহিলা সহচরীদের নিয়ে! তাহলে ‘রাত দখল’ বা দ্রোহের কার্নিভালের অন্যতম মুখ যিনি, তাঁরই শিরদাঁড়া সোজা আছে কি? মহিলাদের নিরাপত্তা ও মহিলাদের সম্মান রক্ষার দাবিতে স্লোগান দিয়েছেন, তিনিই আবার হোটেলে মহিলাদের নিয়ে রাত্রিবাস করছেন, এটা কি দ্বিচারিতা নয়? তাহলে বলতেই হয়, প্রতিবাদের নামে নাটক করা হয়েছে, শুধুমাত্র রাজনীতি করতেই দ্রোহের কার্নিভাল, রাত দখল ইত্যাদির জিগির তোলা হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই গোটা ঘটনায় তীব্র ধিক্কার জানিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে, তদন্ত করে ডক্টরস ফ্রন্টের নেতাদের মুখ এবং মুখোশ খুলে দেওয়ার। কীর্তি সামনে আসতেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের সামনের সারিতে থাকা তথাকথিত ‘অরাজনৈতিক’ ডাক্তারবাবুরা।