প্রতিবেদন: স্থানীয় মানুষের রুটিরুজির তোয়াক্কা না করে উন্নয়নের নামে একশ্রেণির অর্থাগমের পথ প্রশস্ত করছে কেন্দ্র। বৈষ্ণোদেবীর রোপওয়ে প্রকল্পের কারণে কাজ হারানোর আশঙ্কায় তাই প্রবল ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ। প্রকল্পের প্রতিবাদে চলতে থাকা বিক্ষোভ সোমবার চূড়ান্ত আকার নেয়। পুলিশকে ঘিরে জনরোষ, বিক্ষোভ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলাও চালানো হয়। পরে লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও জেলাশাসকের আশ্বাসে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট ওঠে। এলাকার সাধারণ মানুষের সমস্যা ও বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা রোপওয়ে প্রকল্প চালু করা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সম্প্রতি বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে দ্রুত পৌঁছনোর পথ হিসাবে কাটরা থেকে রোপওয়ে প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ২২ নভেম্বর থেকে সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়া মাত্রই চলে বিক্ষোভ। স্থানীয় ডুলিওয়ালা, ঘোড়াওয়ালা ও অসংখ্য ছোট ব্যবসায়ীর দাবি, রোপওয়ে প্রকল্প চালু হলে তাঁদের ব্যবসা মার খাবে। রুটিরুজি সংকটে পড়বে। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না দিয়ে প্রচারমুখী উন্নয়নপ্রকল্প শুরু করা যাবে না। অবিলম্বে স্থগিত হোক এই প্রকল্প। প্রসঙ্গত, কাটরা থেকে শুরু হয় বৈষ্ণোদেবীর জন্য ট্রেকিং। ফলে এখান থেকে বিপুল সংখ্যায় স্থানীয় যুবক ডুলি ও ঘোড়ার পিঠে তীর্থযাত্রীদের নিয়ে পর্যটনের কাজ করেন। স্থানীয় মানুষের রুটিরুজির অন্যতম উৎস এই কাজ। এখান থেকে অসংখ্য তীর্থযাত্রী রওনা দেওয়ার কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও আর্থিকভাবে যথেষ্ট লাভবান হন। কিন্তু রোপওয়ে প্রকল্প হলে সরাসরি বঞ্চনার শিকার হবে ডুলি-ঘোড়ার মতো পরিবহণ-পেশার সঙ্গে যুক্ত ও বৈষ্ণোদেবী তীর্থযাত্রীদের উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল স্থানীয় যুবকরা। রোপওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরুর পরেই রবিবার থেকে ধর্মঘটের পথে যান স্থানীয় ডুলিওয়ালা, ঘোড়াওয়ালারা। ফলে কাটরায় আটকে পড়েন তীর্থযাত্রীরা। সোমবার ফের শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে তার উপর হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। পাথরও ছোঁড়া হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ঘটনাস্থলে যান জেলাশাসক রইসি মহাজন। তিনি আশ্বাস দেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা না বলে রোপওয়ে প্রকল্পের কাজ হবে না। সেইসঙ্গে কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহাও জানান, কারওর জীবিকার ক্ষতি হয় এরকম কোনও কাজ করা হবে না। আশ্বাস পেয়ে আপাতত ধর্মঘট তুলে নিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।