জ্বলছে গেরুয়া রাজ্য মণিপুর (Manipur)। কিছুদিন আগেই কুকি জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জিরিবাম জেলার একটি মেইতেই পরিবারের ছ’জনকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সূত্রের খবর, অসম সীমানা লাগোয়া অঞ্চল থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়। পরে জিরিবামের নদীতে এক শিশু এবং বৃদ্ধার মুণ্ডহীন দেহ ভাসতে দেখা যায়। ওই পরিবারের ছ’জনের দেহ পরে উদ্ধার হয়। এর মধ্যে তিন জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আগেই পুলিশের হাতে এলেও এবার আরও তিন জনের তথ্য সামনে এল।
আরও পড়ুন-সাড়ে তিন মাসের মধ্যে ছ’টি খুন কেরলে, দিশেহারা পুলিশ
এবার বিজেপি রাজ্যে ১০ মাসের এক শিশু-সহ ওই পরিবারের আরও তিন জনের দেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সামনে এল। বুধবার ওই রিপোর্ট হাতে পেয়ে শিউরে উঠছেন অনেকেই। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ওই ছ’জনের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ১০ মাসের শিশু এবং ৩১ বছর বয়সী মহিলার চোখ খুবলে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা। আট বছরের শিশুর দেহে একাধিক গুলির ক্ষত রয়েছে। ১০ মাসের ওই মৃত শিশুটির নাম লাইশ্রাম লামগানবা। পচাগলা অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর দু’টি চোখই উপড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গোটা শরীরে রয়েছে ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন। তাঁর গলাতেও ধারালো অস্ত্রের ক্ষত আছে। মাথা দেহ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও আট বছরের শিশুর উপরেও চলেছে নির্মম অত্যাচার। পিঠ ও পেটে রয়েছে একাধিক বুলেটের ক্ষত। এমনকি ৩১ বছরের মহিলার মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে রিপোর্টে। মাথার খুলির এক দিক ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে। গায়েও রয়েছে গুলির বেশ কিছু ক্ষত।
আরও পড়ুন-ঝাড়খণ্ডে শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া, লিভ ইন সঙ্গীকে খুনের পর দেহ ৫০ টুকরো
প্রসঙ্গত, জিরিবামের এই ঘটনার পরেই ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে। এই নৃশংসতার বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। উত্তেজিত জনতা রাজ্যের কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় বলে খবর। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পৈতৃক ভিটেতেও হামলার চেষ্টা হয়। ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় কার্ফু জারি করা হয়েছে ও বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্য।